রেজিনার ব্যাপারে বিজিবি-বিএসএফ’র সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ
ভারতীয় তরুণী রেজিনা নিজ দেশে ফিরতে চাইলে আইনি প্রক্রিয়ায় ফিরতে হবে। এমনটাই জানান প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্টরা। মঙ্গলবার তাকে নিয়ে এই প্রতিবেদকের কথা হয় দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, আইনজীবী ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে।
জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম জানান, মানবিক বিবেচনায় নিয়ে ভারতীয় তরুণী রেজিনার বিষয়টি দেখছি। তার বাংলাদেশে আসার প্রক্রিয়াটি সঠিক ছিল না। সহজ প্রক্রিয়ায় তাকে দেশে ফেরত পাঠানো যায় কিনা তা আমরা খুঁজে দেখছি। তবে তাকে আইনি প্রক্রিয়ায়ই দেশে ফিরতে হবে। ইতোমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পার্বতীপুর থানাকে লিখিতভাবে জানিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের আন্তরিকতা থাকবে যাতে মেয়েটি দ্রুত তার দেশে ফিরতে পারে।
পুলিশ সুপার হামিদুল আলম জানান, মেয়েটি বর্তমানে সুস্থ। পুলিশি তদারকিতে সে পার্বতীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন। আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে বিজিবি ও বিএসএফ’র সঙ্গে কথা বলেছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেয়েটিকে তার দেশে ফেরত পাঠানো যাবে। আর যদি না হয় তাহলে আদালতের মাধ্যমে জেলখানায় নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানো হবে। তারপর চলমান প্রক্রিয়ায় রেজিনাকে তার দেশে পাঠানো হবে।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনাম আলীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মেয়েটিকে মামলা ছাড়া বেশি দিন হাসপাতালে রাখা উচিত হবে না। সবার আগে তার পূর্ণ নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। পুলিশের উচিত যত দ্রুত সম্ভব তাকে জেলখানায় নিরাপদ হেফাজতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। অন্য কোনো উপায়ে তার দেশে ফেরার কোনো উপায় নেই।
দিনাজপুর মহিলা পরিষদের সদস্য নারী নেত্রী মনোয়ারা সানু জানান, আমরা বিষয়টি জেনেছি। আগামীকাল বুধবার আমাদের পরিষদের মিটিংয়ে ভারতীয় তরুণী রেজিনাকে নিয়ে আলোচনা হবে। অবশ্যই আমরা তাকে আইনগত সহায়তা দেব এবং প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখ্য, দিনাজপুরের পার্বতীপুর শহরের রোস্তমনগর মহল্লার সুজন শেখের ছেলে সাগর শেখ (২৮) ভারতের আসাম প্রদেশের সুনিতপুর জেলার তেজপুর এলাকার মহাভৈরব থানার গুটলংবিতোসুতি গ্রামের মেয়ে রেজিনা আহম্মেদকে কলকাতার বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে করে। এরপর তাকে বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। পরে তার ওপর শুরু করে নির্যাতন। নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী ৭ মার্চ মঙ্গলবার পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
রেজিনা আহাম্মেদ ভারতের আসাম প্রদেশের সুনিতপুর জেলার তেজপুর এলাকার মহাভৈরব থানার গুটলংবিতোসুতি গ্রামের পিকআপচালক আবদুর রশিদ ও মা মাজেদা বেগমের মেয়ে।
মন্তব্য চালু নেই