রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে যাচ্ছেন আ.লীগের যেসব নেতা
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ১১ জানুয়ারি বুধবার অনুষ্ঠেয় এ সংলাপে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গভবনে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল। দলটির সংলাপের প্রস্তাবনা তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত এক নেতা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদকেই গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
জানা গেছে, বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করবেন রাষ্ট্রপতি। বৈঠকের জন্য নির্বাচিত আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল মাল আব্দুল মুহিত, আমির হোসেন আমু, এইচ টি ইমাম, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এ্যাম্বাসেডর মো. জমির, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সাহারা খাতুন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবির নানক, ডা. দীপু মনি, আইন সম্পাদক আব্দুল মতিন খসরু ও প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
জানা গেছে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপের জন্য আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। এতে দেশের সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের আলোকে রাষ্ট্রপতিকে উপযোগী যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তাব জানাবে আওয়ামী লীগ। নতুন ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত নেবেন আওয়ামী লীগ তাতে স্বাগত জানাবে বলেও দলটির পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিতে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে ইতোপূর্বে আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনগুলোর স্বচ্ছতা নিয়েও কথা বলবে আওয়ামী লীগ।
প্রসঙ্গত সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ হচ্ছে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ক অনুচ্ছেদ । এখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিধানগুলো স্পষ্টভাবে বলা রয়েছে। তবে এই অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশন গঠনে সংসদে আইন পাশ করার কথা বলা থাকলেও এখনও তা কোনও সরকার বাস্তবায়ন করেনি।
জানা গেছে, সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নেরও প্রস্তাব দেবে আওয়ামী লীগ। তবে, নতুন কমিশন গঠনে সময় কম থাকায় দ্রুততার সঙ্গে সেটা সম্ভব কী না সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির হাতেই ছেড়ে দেবে। তবে রাষ্ট্রপতি আইন প্রণয়নের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের প্রস্তাবনা তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত এক নেতা বলেন, তাদের প্রস্তাব থাকবে একটিই, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যেকোনও সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করতে পারেন। নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিতে আইন প্রণয়ন সম্ভব হলে দলটির তাতেও আপত্তি থাকবে না রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে।
প্রসঙ্গত: রাষ্ট্রপতি সংলাপের জন্য আওয়ামী লীগকে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি পাঠানোর আমন্ত্রণ জানালেও ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রপতির দফতরে আলোচনা করে প্রতিনিধি সংখ্যা ১৯ জনে বাড়িয়ে নেয়। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ১৫/১৬ জন নেতা বঙ্গভবনে গিয়েছেন। আমরা এত বড় রাজনৈতিক দল, আমাদের মাত্র ১০ সদস্য কেন দাওয়াত পেলাম?
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে গতবারের ধারাবাহিকতায় এবারও সংলাপের আয়োজন করেছেন রাষ্ট্রপতি। সংসদের বাইরে থাকা প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করেন। তিন দফায় এ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২২টি দলের সঙ্গে তিনি সংলাপ করেছেন। বুধবার অনুষ্ঠিত হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে।এরপর অন্য কোনও দলের সঙ্গে সংলাপ হবে কী না জানা যায়নি। বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের পর আর কোনও দলের সঙ্গে সংলাপের কর্মসূচি এখনও পর্যন্ত নেই। তবে বুধবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানা গেছে।
দেশে বর্তমানে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হয়েছে। জামায়াত ইসলামী এক সময় নিবন্ধিত থাকলেও ২০১৩ সালের ১ আগস্ট উচ্চ আদালতের এক আদেশে দলটির নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই