আজ চতুর্থ ধাপের নির্বাচন
আজ (শনিবার) চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনের ভোটযুদ্ধ। এ দফায় ৭০৯ ইউপিতে ভোট হবে। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল শুরু করেছে। এছাড়া বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও মাঠে রয়েছেন। নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের প্রচার।
কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু করার কথা বলা হলেও এ দফায় আওয়ামী লীগ ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ দুই গ্রুপের মধ্যেই মূলত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, প্রায় অর্ধেকের বেশি ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। যাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও দলের এক শ্রেণীর নেতাকর্মী তাদের মদদ দিচ্ছেন। আগের তিন দফায় নির্বাচনের যেসব সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগই হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে।
এ অবস্থায় অনেক প্রার্থী ইতোমধ্যে চতুর্থ দফায় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে ইসিতে প্রার্থীদের একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। সেখানে তারা কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, সহিংসতা ও ভোটকারচুপি ঠেকাতে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী, বিএনপির ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন সরকারদলীয় প্রার্থী পুলিশ ব্যবহার করে তাদের সমর্থিত নেতাকর্মীদের হয়রানি করছেন। বহিরাগতদের এলাকায় প্রবেশ করিয়ে সাধারণ ভোটারদের মনে ভীতির সৃষ্টি করা হচ্ছে।
কমিশন বলছে, চতুর্থ দফায় নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আগের তিন দফার চেয়ে আলাদা কোনো ব্যবস্থা এ দফায় নেয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, ভোটার সিলমোহরসহ সব নির্বাচনী সরঞ্জাম আজ রাতের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট সব ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সব ধরনের প্রচার, মিছিল মিটিং, পথসভায়। এছাড়া ইসির অনুমোদিত যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যানচলাচলের ওপর রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠলে তাৎক্ষণিক তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৭৪৩টি ইউপির ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও নির্বাচন হচ্ছে ৭০৯টিতে। বিভিন্ন কারণে ৩৪টি ইউপির নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন এবং স্থগিত করতে হয়েছে।
সূত্র জানায়, চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৭০৯ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৩ হাজার ২৪৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র ১ হাজার ৫২২ জন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৭২৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়াও নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে ৭ হাজার ১৫৯ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২৪ হাজার ১৮৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৭২৪, বিএনপির ৬১৯ জন, জাতীয় পার্টির ১৫৬ জন, জাসদের ৪২ জন, ইসলামী আন্দোলনের ১৫৪ জন এবং বাকি প্রার্থীরা অন্য দলের।
প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে মোট ২ হাজার ৬৯২টি ইউপির মধ্যে ইতোমধ্যে ১৫০ জন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৫৪ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৩৪ জন, তৃতীয় ২৯ জন ও চতুর্থ ধাপে ৩৩ জন। অন্যদিকে চার ধাপে নির্বাচনে ৩৮৭টি ইউপিতে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই।
মন্তব্য চালু নেই