রাজন হত্যা : এসআই আমিনুল প্রত্যাহার

শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামকে মঙ্গলবার রাতে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। রাত ৯টায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, দায়িত্বে অবহেলা এবং রাজনের পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসআই আমিনুল ইসলামকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি), উত্তর এর উপ-কমিশনার কার্যালয়ে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা শেখ আজিজুর রহমান ও স্বজনদের বিভিন্ন অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে এসএমপি। এসএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এম রোকন উদ্দিনকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অপর সদস্যরা হলেন— উপ-কমিশনার মুশফেকুর রহমান ও ডিসি (দক্ষিণ) জেদান আল মুসা।

সামিউল হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা ও স্বজনরা থানায় মামলা করতে গেলে জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল ইসলাম তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং প্রকৃত খুনীদের আড়াল করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ছাড়া এসআই আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে সামিউলের ঘাতক কামরুল ইসলামকে সৌদি আরব পালিয়ে যেতে সহায়তা করারও অভিযোগ করেছেন সামিউলের বাবা আজিজুর রহমান। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।

প্রসঙ্গত, সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের মাইক্রোবাসচালক শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে রাজন স্থানীয় অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়। পরিবারকে সাহায্য করতে সে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করত। বুধবার ভোরে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের টুকেরবাজার এলাকায় ভিডিও ধারণ করে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় শিশু রাজনকে। পরে তার লাশ গুম করার চেষ্টা করে ঘাতকরা। সকাল ১১টার দিকে একটি মাইক্রোবাস থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

ওই ঘটনায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানায় প্রথমে পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান মামলার বাদী হন। মাইক্রোবাসে করে রাজনের লাশ ফেলার সময় হাতেনাতে আটক মুহিতকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া, তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই