যে ১১ অভ্যাসের কারণে কর্মস্থলে আপনি সম্মান হারাবেন
আপনি বাড়িতে বা বন্ধুদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেন কর্মস্থলে তার বেশিরভাগই হয়তো আগ্রাসী বলে বিবেচিত হতে পারে।
সমস্যাটি হলো বেশিরভাগ লোকই হয়তো তাদের অসুবিধার কথাটি মুখে উচ্চারণ করবে না।
কিন্তু মনে মনে ঠিকই নোট টুকে রাখবে।
এমন কোনো আচরণকারীর ভুলটি হলো অসতর্কতা এবং এই ধারণা যে তার বাজে আচরণ হয়তো কেউ লক্ষ্য করছেন না। এতে হয়তো আপনি একটা সময়ে গিয়ে দেখবেন যে, লোকে আপনাকে খুব একটা পছন্দ করছেনা এবং বড় কোনো সুযোগ বাগিয়ে নেওয়ার সময় আপনি অন্যদের সমর্থন পাচ্ছেন না।
নিচে এমন ১১টি আচরণের তালিকা দেওয়া হলো:
১. অতিরিক্ত শেয়ার
সপ্তাহশেষের পার্টি সেলফিগুলো বা ডেটিংয়ের তৎপরতার বিস্তারিত বিবরণমূলক ছবিগুলো হয়তো দেখতে নিরীহ এবং চটুল মনে হতে পারে। কিন্তু খুব বেশি বিস্তারিত এবং ইভেন্ট শেয়ার করার ফলে লোকে আপনাকে আত্মরতিপ্রবণ এবং অতিবেশি মনোযোগ প্রত্যাশী মনে করবেন।
২. অভিযোগ করা
এমন একটি কর্মপরিবেশ পাওয়া ভালো। যেখানে আপনি আপনার অসন্তুষ্টিগুলো প্রকাশ করতে পারবেন। কিন্তু কিছু মানুষ আছেন যারা কোনো নিবিড় মূল্যায়ন ছাড়াই সবকিছু নিয়েই শুধু অভিযোগ করেন। সতুরাং অভিযোগ না করে বরং সমস্যার সমাধানকারী হন এবং আরো গঠনমূলক উপায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করুন।
৩. মিথ্যা বলা বা চুরি করা
অনেকে ভাবেন একটু আধটু মিথ্যা বললে হয়তো কোনো সমস্যা হবে না। তাই না? কিন্তু এই ধারণা ভুল। এমন অনেক লোক আছেন যারা মনে করেন সামন্যতম মিথ্যাও গ্রহণযোগ্য নয়। আর একই কথা প্রযোজ্য ছোটখাটো চুরির বেলায়ও। ছোটোখাটো অনৈতিক ব্যবহারও অনৈতিকই বটে। আপনাকে ছোটোখাটো অনৈতিক কাজ করতে দেখে লোকে ভাববে আপনি হয়তো বড় কাজেও অনৈতিকতা অবলম্বন করবেন।
৪. পরিশ্রম বিমুখতা
আপনি যদি আপনার দায়িত্বটুকু যথাযথভাবে পালন না করেন তাহলে দলের অন্য সদস্যরা আপনাকে অপছন্দ করা শুরু করবে। আর আপনি যদি খুব বেশি অফিস কামাই করেন তাহলে যারা নিয়মিত অফিসে আসেন তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হবে। যে কাজ বা চাকরিতে আপনার অনুপ্রেরণা আছে তেমন কাজই করুন।
৫. দেরি করা
আপনি যদি সবসময়ই কর্মস্থল ও বৈঠকে পৌঁছাতে দেরি করেন বা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারেন তাহলে অন্যরা আপনার ওপর বিরক্ত হবে। এতে আপনাকে অনেক বেশি স্বার্থপর, অসংগঠিত এবং অন্যদের সময়ের মূল্যের প্রতি উদাসীন মনে হবে। এবং আপনি বিশ্বস্ততা হারাবেন।
৬. নাটুকেপনা
আপনি সবসময়ই যদি আপনার ব্যর্থতার পেছনে কারণ দর্শানোর জন্য আবেগি নাটুকেপনার আশ্রয় নেন তাহলে লোকে আপনাকে এড়িয়ে চলা শুরু করবে।
৭. গুজব ছড়ানো
লোকে হয়তো আপনার কাছ থেকে কারো প্রমোশন বা কারো বিয়ে নিয়ে কী হচ্ছে তা শুনতে পছন্দ করবে। কিন্তু পাশাপাশি এর ভিত্তিতে তারা আপনাকে বিচার-বিচেনাও করবেন। আপনার ব্যাপারে তারা নিজের কাছে নিজে নিজে বলতে থাকবেন এই লোককে কোনো সংবেদনশীল বিষয়ের তথ্য দিয়ে বিশ্বাস করা যাবে না।
৮. অমার্জিত আচরণ
অফিসে প্রকাশ্যে কোনো ঝুকিপূর্ণ বিষয়ে আলাপ করলে লোকে আপনাকে অমার্জিত ভাববে এবং আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলোতে এড়িয়ে চলা হবে।
৯. অতি বেশি ক্যাজুয়াল পোশাক পরা
এটি একটি ভালো বিষয় যে, অনেক অফিসেই এখন আর স্যুট-টাই পরে যেতে হয় না। কিন্তু তাই বলে সোয়েট প্যান্ট বা পায়জামা পরে অফিসে যাবেন না। সবসময়ই বাধ্যবাধকতার চেয়ে অন্তত এক স্তরের উন্নত পোশাক পরে অফিসে যাবেন। এতে আপনি অনেক বেশি পেশাদারিত্ব অনুভব করবেন। আর অন্যরাও আপনার ফ্যাশন রুচির প্রশংসা করবেন।
১০. ভণ্ডামি
আপনার কথা ও কাজে মিল না থাকলে আপনি খুব সহজেই কর্তৃত্ব হারাবেন। সুতরাং কথার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করার চেষ্টা করুন।
১১. অন্যদেরকে দোষারোপ করা
যারা নিজেদের তৎপরতা এবং অভিজ্ঞতার দায় গ্রহণ করতে জানেন লোকে তাদের মূল্যায়ন ও সম্মান করেন। নিজের ভুলের জন্য অন্যকে দোষারোপ করলে আপনি দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং হীন বলে বিবেচিত হবেন। যারা দায় গ্রহণ করতে জানেন তারাই নেতৃত্ব পান।
সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার
মন্তব্য চালু নেই