যে শহরে নগ্ন মানুষের বাস!

দক্ষিণ ফ্রান্সের অদ্ভুত এক শহরের গল্প শোনাই আজ। কেপ দাগদে নামের ওই সমুদ্র শহরটির গল্প শুনলে অবাক হবেন নিশ্চয়ই, কারণ শহরটিতে গ্রীষ্মকালে বাস করে কেবল নগ্ন মানুষরা!

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে শহরটিতে ছয় হাজার লোকের বাস। তবে গ্রীষ্মে জনসংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায় শহরটির। কারণ ওই সময়ে মেডিটেরিয়ান সাগরের নীলজলে অবগাহনে আসে আরো ৪০ হাজার মানুষ। যারা আসে তাদেরও আসতে হয় নগ্ন হয়ে- কারণ শহরে যে ওই একই রীতি।

সুন্দর সমুদ্রসৈকত আর নীল জলরাশির শহরটির মেয়রের নাম ফিল হোদ। হোদ নিজেই ওই ‘নগ্নদের’ দলেরই লোক। নিজে এই শহরের সভ্যতার নাম দিয়েছেন ‘প্রাকৃতিক সভ্যতা’ নামে। গার্ডিয়ানের সাথে আলাপ করার সময় জানালেন, প্রকৃতি ও আধুনিকতার মিশেলে শহরটিকে পৃথিবীর একমাত্র নগ্নদের শহর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

নগ্ন নাগরিকদের আরো দাবি, প্রকৃতি মানুষ সৃষ্টি করেছে কিন্তু শহর বা আধুনিকতার অন্যান্য উপাদান সৃষ্টি করেনি। মানুষই এসব সৃষ্টি করেছে আর এসব আধুনিকতার উপাদানের সবচাইতে বড় শিকার মানুষই। তাই ওই ‘তথাকথিত’ আধুনিকতা থেকে দূরে থাকতে নগ্ন শহরের এই আয়োজন।

মেয়র ফিল জানালেন, নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে প্রায় জনশূণ্য এই সৈকতে নগ্নদের আগমণ শুরু। প্রথমে প্রকৃতির সান্নিধ্যের জন্য কিছু মানুষ সুন্দর এই সৈকতে এসে থাকতে শুরু করে। আস্তে আস্তে মেডিটেরিয়ান সাগরের বিখ্যাত নীল জলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে পর্যটক আসতে শুরু করে এখানে। এরপর আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে শহর। তবে যতই শহরের স্থাপনা গড়ে উঠুক, একটুও নাকি পাল্টায়নি কেপ দাগদে। এখনো কান পাতলে প্রকৃতির অনন্ত নিঝুমতা আর সাগরের ঢেউয়ের শব্দ শুনতে পায় মানুষ।

ফিল আরো বলেন, ‘এই শহরে ঢোকার নিয়ম হয়তো একটু অদ্ভুত। কিন্তু একবার এসে কেউ যখন ফিরে যাবে, সাথে নিয়ে যাবেন অনন্য এক স্মৃতি। যা অনুপ্রেরণা জোগাবে বেঁচে থাকার।



মন্তব্য চালু নেই