যে কারণে ভাইকে কাঁধে নিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিল অনাথ বালিকা
কিশোর যদি বয়স্কের মতো আচরণ করে, তবে তাকে কি বলবেন? আসলে অভিজ্ঞতার ঝুড়ি হয় না। সে মানো না কোন বয়সের গন্ডিও। এমনই এক দৃষ্টান্ত হলো ১১ বছর বয়সী মালতী।
মালতীর চার বছরের ছোট ভাই জ্বরে আক্রান্ত। নামছে না দেখে তাকে কাঁধে করে এই বয়সে ৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে হাসপাতালে নিয়ে যায় অনাথ এই কিশোরী।
সপ্তাহ খানেক আগে ভারতের ঝাড়খন্ডেরই অসহায় এক বাবার ঘটনা সামনে এসেছিল, যেখানে ৯ বছরের ধর্ষিতা কন্যাকে কোলে করে রোজ ৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে তিনি হাসপাতালে নিয়ে যান ড্রেসিং করানোর জন্য। রোদ, ঝড়, জল কোনও খামতি নেই। সে ঘটনা সকলকে বেশ অবাকই করেছিল।
এর পর মালতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। সেই একই রাজ্যের মেয়ে মালতী। আদিবাসি অঞ্চলের গোড্ডা জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে ভাইয়ের সঙ্গে থাকে সে। মা-বাবাকে অল্প বয়সেই হারিয়েছে তারা। আপন বলতে ওই দু’ জনই। গ্রামে সামান্য প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাটুকুও নেই।
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে ভাইয়ের। সেবা-শুশ্রূষা করেও কোনও ফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়াই স্থির করে মালতী। বাড়িতে সে ছাড়া কোনও অভিভাবক নেই। তাঁর বয়সও হয়েছে অনেক। ফলে তিনি যে ভাইকে নিয়ে যেতে পারবেন না তা ভালোই জানত মালতী।
ভাইকে বাঁচাতে প্রাণ বাজি রেখে এই ছোট্ট বয়সে তাকে কাঁধে করে ৮ কিলোমিটার হেঁটে সুন্দরপাহাড়ি হাসপাতালে পৌঁছে যায় সে।
ডাক্তাররা জানান, সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে ভাইকে। এ বার কী করবে স্তে না এ বার আর কাঁধে করে হাঁটতে হয়নি। মনোজ ভগত নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির প্রচেষ্টায় গাড়ি করেই তাঁকে সদর হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়।
ঘটনা যেমন প্রশংসার দাবি রাখে, তেমনই কয়েকটি প্রশ্ন সকলের সামনে তুলে ধরে। কেন এত খারাপ অবস্থা গ্রামগুলির? কেন এত দারিদ্র? যেখানে ঝাড়খন্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন নির্বাচন লড়েন, তার এত খারাপ অবস্থা হয় কী করে? প্রশ্ন আছে, থাকবেও। কিন্তু উত্তর নেই। সূত্র: এই সময়
মন্তব্য চালু নেই