যে কারণে প্রায়ই মটরশুঁটি খাওয়া উচিৎ
সুস্বাদু মটরশুঁটি পুষ্টির শক্তিঘর হিসেবেই পরিচিত। পোলাওয়ের সাথে, নুডলসের সাথে, সিদ্ধ করে ইত্যাদি নানা ভাবেই খাওয়া হয় মটরশুঁটি। সহজলভ্য ও জিভে জল আনা এই সবজিটির ক্যালোরির পরিমাণ খুব থাকলেও পুষ্টিতে ভরপুর থাকে। মটরশুঁটিতে ভিটামিন ও মিনারেল থাকার পাশাপাশি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, লুটেইন এবং জেনান্থিন ও থাকে। মটরশুঁটির স্বাস্থ্য উপকারিতার বিষয়ে জেনে নিই চলুন।
১। ওজন কমতে সাহায্য করে
মটরশুঁটি ফাইবারে পরিপূর্ণ হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকতে সাহায্য করে। ফলে অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স খাওয়া থেকেও বিরত থাকা যায়। তাছাড়া এর ক্যালোরির পরিমাণও কম থাকে। এক কাপ মটরশুঁটিতে আনুমানিক ১১৮ ক্যালোরি থাকে। এজন্যই ওজন কমতে সাহায্য করে মটরশুঁটি।
২। হৃদপিন্ডের জন্য ভালো
মটরশুঁটিতে নিয়াসিন থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও মটরশুঁটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা রক্তনালীতে ব্লক হওয়া প্রতিরোধ করে। মটরের সুপ ব্লাডপ্রেশার কমাতে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৩। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে
আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে তাহলে পেট পরিষ্কারের জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিৎ। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্ত হতে ফাইবার সমৃদ্ধ মটরশুঁটি খেতে পারেন। এছাড়াও মটরশুঁটি বিপাকের উন্নতিতেও সাহায্য করে।
৪। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
মটরশুঁটিতে ভিটামিন কে থাকে যা ক্যালসিয়ামের শোষণে সাহায্য করে, ফলে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। ১ কাপ সিদ্ধ মটরশুঁটিতে দৈনিক ভিটামিন কে এর চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ হয়। এছাড়াও মটরশুঁটিতে ভিটামিন বি ১ ও ফলিক এসিড ও থাকে যা অষ্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৫। বয়সের লক্ষণ প্রতিরোধ করে
বাতাসের সংস্পর্শে ধাতুতে যেমন মরিচা পড়ে তেমনি আমাদের শরীর ও ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। মটরশুঁটির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি কমায় এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়। এ কারণেই বেশি বেশি মটরশুঁটি খাওয়া ভালো যাতে বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াটি ধীর গতির হয়।
৬। ডিপ্রেশন কমতে সাহায্য করে
এফেক্টিভ ডিজঅর্ডার নামক জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায় যে, ফলেট নামক ভিটামিন কম মাত্রায় গ্রহণের ফলে বিষাদগ্রস্থতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ডিপ্রেশনে যারা ভোগেন তাদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। মেজাজের উন্নতি ঘটাতে সিদ্ধ মটরশুঁটি খেতে পারেন।
৭। পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
মটরশুঁটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদান থাকে বলে আপনাকে স্বাস্থ্যবান রাখতে ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এর কারণ মটরশুঁটিতে কোমেস্ট্রোল নামক পলিফেনলিক যৌগ থাকে যা পাকস্থলীর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর সাথে সম্পর্কিত।
এছাড়াও মটরশুঁটিতে ভালো মানের ভিটামিন সি থাকে বলে ইমিউনিটির উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। মটরশুঁটি আয়রনে পরিপূর্ণ থাকে বলে অ্যানেমিয়া ও ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। প্রোটিন, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ হওয়ায় শিশুর দেহের বৃদ্ধিতেও চমৎকার ভাবে সাহায্য করে মটরশুঁটি। আলঝেইমার্স, ব্রংকাইটিস ও ক্যান্ডিডা প্রতিরোধেও সাহায্য করে মটরশুঁটি। ভিটামিন এ থাকে মটরশুঁটিতে যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
মন্তব্য চালু নেই