যে কারণে এই তরুণীটির চোখ দিয়ে রক্ত ঝরে

হলিউডের ভৌতিক ছবিতে এমনটি দেখা যায়। প্রেতাত্মা ভর করা কোনো চরিত্রের চোখ দিয়ে কিংবা নাক দিয়ে গলগল করে রক্ত বেরিয়ে ভেসে যায় সব। আর তা দেখে দর্শকের গা শিউরে ওঠে।

কিন্তু বাস্তবে যদি সুস্থ-সবল একজন তরুণীর চোখ, নাক, কান এমনকি হাতের আঙুলের নখ দিয়ে রক্ত পড়ে নিয়মিত, তাহলে কি বিশ্বাস হবে?

এমন অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটছে যুক্তরাজ্যে। মেরিন হারভিস নামের এক তরুণীর চোখ ও কান দিয়ে দিনে চার বেলা রক্ত বের হয়। এক-দু দিন নিয়, গত তিন বছর ধরে নিয়মিতই এটি ঘটে চলেছে মেয়েটির জীবনে।

ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই গা-ছমছমে ঘটনার বিবরণ।

তবে কী কারণে এমনটি ঘটছে তা শনাক্ত করতে পারেননি চিকিৎসকরা। ভয়ংকর ও রহস্যময় এই রোগটি দেখে রীতিমতো হতবাক তারা। তিন বছর ধরে চিকিৎসা চলছে, কিন্তু কোনো ফল নেয়।

ঘটনা শুরু ২০১৩ সালে। রাতে সুস্থ-সবল মেরিন হারভিস ঘুমুতে যান। সে রাতে চমৎকার ঘুম হয় তার। এক ঘুমে রাত পার করে সকালে উঠে ভয়ানক চমকে যায় মেরিন। রক্তে ভিজে আছে তার বালিশ। কোথা থেকে এল রক্ত! পরে দেখেন তার গাল ভিজে আছে রক্তে। নিজের বাঁ চোখ থেকে রক্তের ধারার চিহ্ন।

ভয় ও আতঙ্কে মাকে ডাকে মেরিন। দ্রুত ছুটে এসে মেয়েকে দেখে মা ক্যাথরিনও হতবাক। মেয়ের চোখ থেকে এই রহস্যময় রক্তক্ষরণে ভীত-সন্ত্রস্ত মা ক্যাথরিন পরে মেয়েকে নিয়ে যান চিকিৎসকের কাছে। মেয়ের চোখের কয়েক দফা পরীক্ষা করিয়েও কোনো কারণ খুঁজে পাননি চিকিৎসকরা।

এরপর দুই বছর মেরিনকে আরো বেশি পর্যবেক্ষণ করা হয়। নানা ওষুধের পাশাপাশি তার খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা হয়। কিন্তু কাজ হয়নি কোনো।

দিনে দিনে মেরিনের অবস্থা আরো খারাপের দিকে যায়। ২০১৩ সালে যেদিন প্রথম চোখ দিয়ে রক্ত পড়েছিল, এর কয়েক সপ্তাহ পর তার জিহ্বা ও কান দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়। ক্রমে ক্রমে নাক ও আঙুলের নখ দিয়ে রক্ত বের হয়। নিয়ম করে দিনে অন্তত চারবার রক্তক্ষরণ হচ্ছে মেরিনের।

যুক্তরাজ্যে মেরিনই প্রথম নারী যিনি এই ধরনের রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা তাকে রহস্যময়ী নারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

চোখ দিয়ে যখন রক্ত গড়িয়ে পড়ে তখন খুব কষ্ট হয় মেরিনের। মেরিন বলেন, “২০১৩ সালে হঠাৎ করেই আমার বাম চোখ দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়। ঘুম থেকে উঠে দেখি রক্তে আমার বালিশ ভিজে গেছে। রক্তে আমার পুরো চেহারা ভিজে যায়। এবং চোখের ভেতর তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়। পরিবারের সবাই আমাকে দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে যায়। এরপর তারা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।”

মেরিন আরো জানান, “আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে অনেক চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।”



মন্তব্য চালু নেই