যে কথাগুলো নিজের সন্তানকে কখনোই বলা উচিত নয়
যখন কাজের অনেক চাপ থাকে তখন হয়তো আপনি আপনার সন্তানকে এমন ভুল কিছু কথা বলে থাকেন যা শুনে সে খুবই কষ্ট পায়, রেগে যায় বা দ্বিধান্বিত হয়। আজ এমনই কিছু ভুলের কথা আমরা জেনে নেব যা আপনার সন্তানকে কোন পরিস্থতিতে কখনোই বলা ঠিক নয়। কারণ এই কথাগুলো আঘাত করে শিশুদের অনেক গভীরে।
১। আমাকে একা থাকতে দাও
আরকানসাস এর ওজারক সেন্টার ফর ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিস এর প্রতিষ্ঠাতা সুজেট হ্যাডেন এল্গিন(পি.এইচ.ডি) বলেন,যখন আপনি আপনার সন্তানকে ক্রমাগত এই কথাটি বলতে থাকবেন যে,‘আমাকে একা থাকতে দাও’ বা ‘আমাকে বিরক্ত করবে না’ বা ‘আমি এখন ব্যস্ত আছি”,তখন সে মনে করে যে আপনি তাকে গুরুত্বই দিচ্ছেন না। যে শিশুর শৈশবে এই বিষয়টি বেশি হয়ে থাকে সে বড় হয়ে তাঁর সব কথা তাঁর মা-বাবাকে বলতে পছন্দ করে না। ছোট বেলা থেকেই মা-বাবার উচিৎ সন্তাকে সময় দেয়া। তাই যখন আপনার কাজের খুব চাপ থাকবে তখন কাজ শুরুর আগেই আপনার সন্তানকে বলুন যে, “আমাকে এখন এই কাজটি শেষ করতে হবে,এই সময়ে তুমি চুপচাপ বসে ছবি আঁকো। কাজটি শেষ হলে আমরা মজা করবো”।
২। তাড়াতাড়ি কর!
আপনার সন্তানটি হয়তো সকালে নাস্তা খেতে খুব দেরি করে বা তাঁর কেডস পরতে দেরি করে, যার ফলে তার স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যায়। এর জন্য আপনি যদি তাকে শাস্তি দেন বা তাড়াতাড়ি কর কথাটি বারবার বলেন, তাহলে সে খুব বাড়তি চাপ অনুভব করবে, বেবি মাইন্ডস বইটির সহ লেখিকা(পি.এইচ.ডি)লিন্ডা অ্যাক্রিডোলো এমনটাই বলেন। তাই আপনার কণ্ঠস্বর নরম করে বলুন, “চলো তাড়াতাড়ি করি” এতে সে বুঝতে পারবে যে আপনিও তাঁর দলেই আছেন। কিংবা কোথাও যাওয়ার সময় দুজনে একসাথে রেডি হোন এবং বলুন “চলো দেখি কে আগে তৈরি হতে পারে”।এতে সে জলদি কাজ শেষ করা শিখবে কোনরকম মানসিক চাপ ছাড়াই।
৩। তুমি ওর মতো হতে পারো না?
একটা শিশুর জন্য সবচেয়ে খারাপ অনুভূতি হচ্ছে যখন তাকে তাঁর সহদর বা অন্য কোন শিশুর সাথে তুলনা করে বলা হয় যে, “তুমি ওর মতো হতে পারোনা”! এটা করা ঠিক নয়। এতে শিশুর মনোবল নষ্ট হয় এবং যার সাথে তুলনা করা হচ্ছে তার প্রতিও হিংসা সৃষ্টি হয়। প্রতিটা শিশুই অনন্য, তার সেই অনন্যতাকে ভালোবাসা এবং বিকশিত হতে সাহায্য করার প্রথম দায়িত্ব বাবা-মায়ের।
৪। কেঁদো না
শিশু যখন মর্মাহত হয় বা ভয় পায় তখন কাঁদে। তাঁর কান্না থামানোর জন্য বেশির ভাগ বাবা-মা ই বলে থাকেন “কেঁদো না” বা “কাঁদার মত কিছু হয়নি”। এই কথাগুলো বলা ঠিক নয় কারণ শিশু প্রাথমিক ভাবে কান্না বন্ধ করলেও তার মনে এই ধারণা জন্মায় যে, তাঁর অনুভূতির সঠিক মূল্যায়ন আপনি করছেন না। তাই কেন কাঁদছে তার সঠিক কারণ জানার চেষ্টা করুন এবং বুঝিয়ে বলুন। ফলে আপনার সাথে তার বন্ধুত্ব তৈরি হবে, সে তাঁর যেকোন অনুভূতির কথা অনায়াসে আপনাকে বলতে পারবে।
এমনই আরো কিছু কথা আছে। যেমন বাচ্চাদেরকে ধমক দেয়া, তাঁদেরকে গাধা-গরু ইত্যাদি বলা, মারের ভয় দেখানো, শাস্তির ভয় দেয়া ইত্যাদি কথা কখনোই বলতে হয় না।
লিখেছেন- সাবেরা খাতুন
মন্তব্য চালু নেই