যেসব জিনিস অনলাইনে কেনা বিপজ্জনক

প্রযুক্তির কল্যাণে দুনিয়া হয়েছে ছোট, প্রয়োজনীয় সব জিনিসের ভাণ্ডার হাজির হয়েছে হাতের নাগালে। এই সুযোগে অনলাইন বেচাকেনার চলছে ধুম। ঘরে বসে পছন্দের জিনিসটি অর্ডার করলেই মুহূর্তেই হাজির। সময়, পরিশ্রম দুই-ই বাঁচায় বলে ক্রেতাদের একটা বড় অংশ আজ অনলাইন কেনাকাটার ওপর নির্ভরশীল। বেশিরভাগ সৌখিন ক্রেতাদের কাছে অনলাইন কেনাবেচাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। অথচ ব্যবহার্য অতিপ্রয়োজনীয় কিছু জিনিস আছে শুধু অনলাইনের মাধ্যমে দেখে অর্ডার করলেই হল না, সরাসরি দেখে মান যাচাইয়ের ব্যাপার থাকে। তাই অনলাইনে কিছু জিনিস কেনার ব্যাপারে সচেতন থাকা জরুরি। যেমন…
সৌখিন পণ্য

অবিশ্বাস্য সুলভমূল্যে সুন্দর ডিজাইনের হাতব্যাগ, স্টাইলের জুতা, যুগের সঙ্গে মানানসই পোশাক, চোখ ধাঁধানো গহনা কে না কিনতে চাই? এসবের পুরোটাই পাবেন অনলাইন বিক্রেতার ডিসপ্লে পেজে। আপনি এসব জিনিস সত্যিই কমমূল্যে ক্রয় করতে পারবেন, কিন্তু কখনোই এসব পণ্যের সঠিক মান যাচাই করতে পারবেন না। আসল সত্য হল অনলাইন বিক্রেতারা যে মানের পণ্য জনগণের সামনে ছবিতে উপস্থাপন করেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা অনেক নিম্নমানের হয়ে থাকে। অথচ আপনি মূল্য পরিশোধ করছেন উন্নতমানের পণ্যের। এখন ভেবে দেখুন বাজারে গিয়ে দেখেশুনে আসল পণ্যটিই কিনবেন, নাকি ছবিতেই সন্তুষ্ট থাকবেন?

medicinপ্রয়োজনীয় ওষুধ
সৌখিনতার বসে আজকাল অনেকেরই সামান্য পরিশ্রম বাঁচানোর বদঅভ্যাস গড়ে উঠেছে। যেকোনো ধরণের অসুস্থতায় প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে তারা আর দোকানে যেতে চান না। এক দোকান থেকে অন্য দোকানে প্রয়োজনীয় ওষুধ খোঁজার ঝামেলা এড়ানো, যাতায়াত খরচ বাঁচানো, ওষুধের দোকানির সঙ্গে দর কষাকষি এবং সময় বাঁচানোর তাগিদে অনলাইনে ওষুধ কেনাটা উপযুক্ত মনে করেন। তাছাড়া প্রয়োজনীয় যেমন- উত্তেজনাবর্ধক, বিষণ্নতাদূর, জন্মনিয়ন্ত্রক জাতীয় ওষুধের বাস্তব বাজারমূল্য থেকে অনলাইনে সস্তায় পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে। অনেক অনলাইন বিক্রেতা আবার ওষুধ বিক্রির সময় ডাক্তারি পরামর্শপত্রও দেখেন না। ক্রেতার চাহিদা অনুসারে কোনো বিধি না মেনেই দিয়ে থাকেন। অথচ যে ওষুধ কিনছেন তার মান যাচাইয়ের কোনো সুযোগ নেই। আপনার শরীরের জন্য ওষুধটি উপকারী নাকি ক্ষতিকর তার কোনো গ্যারান্টি কেউ দিচ্ছে না। তাই ওষুধ কেনার সময় অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শে বিশ্বস্ত দোকান থেকে কেনা উচিৎ।

ভঙ্গুর পণ্য
নিত্য ব্যবহার্য কিন্তু ভঙ্গুর ইলেক্ট্রনিক পণ্য অনালাইন মার্কেটে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাবেন যেমন, টেলিভিশন। আপনি হয়তো অনলাইন মার্কেট থেকে আকার, রং এমনকি ব্র্যান্ড দেখেও একটা টেলিভিশন পছন্দ করলেন। সবশেষে অর্ডারের ভিত্তিতে আপনার বাসায় পছন্দের পণ্যটি হাজির করলেন কোনো ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের মাধ্যমে। টাকাও পাঠিয়ে দিলেন কোনো একটি মাধ্যমে। অথচ আপনি কি নিশ্চিত এই ভঙ্গুর পণ্যটি আপনার বাসায় পৌঁছানো পর্যন্ত ঠিক থাকবে? যেকোনো ডেলিভারি সার্ভিস কি আপনার পণ্যটি যত্নের সঙ্গে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দেবে? যদি কোনো ক্ষতি হয় তার খেসারত দেয়ার জন্য কেউ দায়বদ্ধ থাকবে না। তাই শখের এসব পণ্য কিনতে একটু সময় খরচ করতে হবে। নিজেই কোনো বিপনিতে গিয়ে মান এবং ত্রুটি যাচাই করে যত্নের সঙ্গে কিনে আনুন।

জুতা
অনলাইন মার্কেট থেকে পায়ের সঙ্গে মানানসই জুতা কেনাটা সবচেয়ে আশঙ্কাজনক। বাস্তবতা হল, এমন কিছু জুতার চেহারা আছে যা দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও আপনার পায়ের সঙ্গে তা মোটেও মানানসই নয়। আবার ছোট, বড় বা আরামদায়ক নাও হতে পারে। টেকসইয়ের ব্যাপারটা সরাসরি হাতে ধরে যতটা বোঝা সম্ভব ছবিতে দেখে তা সম্ভব নয়। তাই পছন্দের জুতা বা স্যান্ডেল নিজের পায়ে লাগিয়ে মানানসইটা দোকান থেকে কিনে আনা অনেক ভালো।

গৃহপালিত প্রাণী
অনলাইন থেকে শখের বসে আদুরে একটি বিড়াল, প্রভুভক্ত কুকুর, কিচিকিচির বাহারি রঙের বা জাতের পাখি কিনতে পারেন। এগুলো কিনতে আপনাকে যে মূল্য পরিশোধ করতে হবে, পরিবহণে চলে যাবে তার থেকে অনেক বেশি। তাছাড়া অনেক সময় এসব প্রাণী অসুস্থ বা দর্শণধারী নাও হতে পারে। আপনি হয়তো নাদুস-নুদুস দেখে অর্ডার করলেন, হাতে পেলেন খর্বকায় প্রাণী। তখন আপনার শখ উড়ে গিয়ে মনটাই ভেঙে যাবে।



মন্তব্য চালু নেই