যেভাবে খুন হলেন এমপি লিটন

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিজ বাসভবনে দুর্বৃত্তদের ছোঁড়া রিভলবারের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

শনিবার সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাহাবাজ গ্রামে এমপির নিজ বাসভবনে গুলিবর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

এমপির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও তার কোল্ডস্টোরেজের ম্যানেজার অনিল সাহা এবং এমপির শ্যালক আবু নাসের মিরন জানান, সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গায় এমপি লিটন তার দোতলা বাসভবনের নিচতলার বৈঠকখানায় কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

এসময় তিনজন যুবক হেলমেট পরা অবস্থায় একটি মোটরসাইকেলে চড়ে এমপির বাসভবনের সামনে আসে। তাদের একজন সেখানে স্টার্ট দেয়া মোটরসাইকেলে বসে অপেক্ষা করছিল। বাকি দুজন এমপি লিটনের সঙ্গে কথা বলার অজুহাতে ঘরের ভেতরে ঢুকে।

কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই দুই যুবক এমপি লিটনকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি ছোঁড়ে। এরপরই তারা দ্রুত সেখান থেকে বেরিয়ে মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা এমপিকে লক্ষ্য করে তিন রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। দুটি গুলি তার বুকের দুপাশে এবং অপরটি উরুতে বিদ্ধ হয়। এতে সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

গুলির শব্দ শুনে বাড়ির এবং আশেপাশের লোকজন ছুঁটে আসেন। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে তিন যুবককে পালাতে দেখেন, কিন্তু তাদেরকে আটক করা সম্ভব হয়নি।

একটি সূত্র জানায়, ওই সময় অন্ধকার থাকায় কাউকে চেনা যায়নি। এছাড়া হামলাকারীরা মাথা থেকে হেলমেটও খোলেনি। ওই সময় এমপি লিটনের সঙ্গে ৫/৬ জন নেতাকর্মী ছিলেন।

পরে আশংকাজনক অবস্থায় এমপি লিটনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. বিমল চন্দ্র রায় এমপি লিটনের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

হামলার ঘটনার পর পরই তার বাড়ি সংলগ্ন বামনডাঙ্গা বাজারে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।



মন্তব্য চালু নেই