যেভাবে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্রে তথ্য হালনাগাদ করবেন

নিত্যদিনের নানা কাজে ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে প্রথমবারের মতো ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়। একই সঙ্গে ভোটার তালিকাও হালনাগাদ করা হয়।দেশব্যাপী এই প্রকল্প পরিচালনা এবং তথ্য সংরক্ষণের সময় বেশ কিছু ভুল তথ্য চলে এসেছে বা এই কয়েক বছরে অনেকের ঠিকানাসহ অন্যান্য তথ্যে পরিবর্তন এসেছে। এত দিন নাগরিকেরা ঢাকার নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের অফিসে যোগাযোগ করে তাঁদের তথ্য হালনাগাদ করতে পারতেন। কিছুদিন হলো ইন্টারনেটে এ কাজটি করা যাচ্ছে। পাশাপাশি নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার ব্যবস্থাও রয়েছে এই ওয়েবসাইটে।

তথ্য হালনাগাদ করার জন্য ভোটারের বর্তমান কার্ডের নম্বর, একটি কার্যকর মোবাইল নম্বর, জন্মতারিখ ও ঠিকানা সম্পর্কিত তথ্য প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে।

ধাপসমুহ

প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী পূরণ করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
কার্ডের তথ্য ও মোবাইলে প্রাপ্ত এক্টিভেশন কোড সহকারে লগ ইন করতে হবে।
তথ্য পরিবর্তনের ফর্মে তথ্য হালনাগাদ করে সেটির প্রিন্ট নিতে হবে।
প্রিন্ট-কৃত ফর্মে স্বাক্ষর করে সেটির স্ক্যান-কৃত কপি অনলাইনে জমা দিতে হবে।
তথ্য পরিবর্তনের স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় দলিলাদি কালার স্ক্যান কপি অনলাইনে জমা দিতে হবে।
নিবন্ধনকৃত ব্যক্তি যে সকল সুবিধা গুলো পাবেন

নিজস্ব প্রোফাইলের তথ্য
নির্বাচন-কালীন ভোটকেন্দ্র সম্পর্কিত তথ্য
কার্ডের তথ্য পরিবর্তন/হালনাগাদ/সংশোধনের জন্য আবেদন
ঠিকানা অথবা ভোটার এলাকা পরিবর্তন/হালনাগাদ/সংশোধনের জন্য আবেদন
হারানো বা নষ্ট কার্ড পুনঃমূদ্রনের আবেদন
ছবি,স্বাক্ষর ইত্যাদি পরিবর্তনের এপয়েন্টমেন্ট করা
আবেদনপত্রের বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি…

লিঙ্ক

https://services.nidw.gov.bd/registration

জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের যে যে কাগজপত্রের প্রয়োজন

(১) জাতীয় পরিচয়পত্র-ধারীর নাম (বাংলা/ইংরেজি) এবং জন্মতারিখ সংশোধনের ক্ষেত্রে, উক্ত সংশোধনের স্বপক্ষে নিম্নবর্ণিত কাগজপত্র/তথ্যাদি জমা দিতে হবে, যথা:-

(ক) শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি/সমমান হলে এসএসসি/সমমান সনদপত্র;
(খ) শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম এসএসসি/সমমান না হলে এবং সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত কিংবা সংবিধিবদ্ধ কোনও সংস্থায় চাকুরীরত হলে, চাকুরী বই/মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও);
(গ) অন্যান্য ক্ষেত্রে, জাতীয় পরিচয়পত্র-ধারীর পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন সনদ/ড্রাইভিং লাইসেন্স/ট্রেড লাইসেন্স/কাবিননামার সত্যায়িত অনুলিপি;
(ঘ) নামের আমূল পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, উল্লেখ্য পরিবর্তনের যথার্থতা সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য দলিলাদি [এসএসসি সনদ/পাসপোর্ট/চাকুরী বই/মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার (এমপিও)/ড্রাইভিং লাইসেন্স, যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য] ছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফ-নামা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কপি;
(ঙ) ধর্ম পরিবর্তনের কারণে নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফ-নামা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির কপি এবং আবেদনের যথার্থতা সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য দলিলাদি (শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স/জন্ম নিবন্ধন সনদ, ইত্যাদি যার ক্ষেত্রে যেটি প্রযোজ্য)।

(২) বিবাহ বা বিবাহ বিচ্ছেদ বা অন্য কোন কারণে কোনও মহিলা তাহার নামের সাথে স্বামীর নামের অংশ (টাইটেল) সংযোজন বা বিয়োজন বা সংশোধন করিতে চাহিলে, তাকে কাবিননামা/তালাকনামা/মৃত্যু সনদ/ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্পাদিত হলফ-নামা/বিবাহ বিচ্ছেদ ডিক্রির সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হইবে। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রয়োজনে, সরেজমিন তদন্ত করতে পারবেন।

(৩) পিতা/মাতার নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে, জাতীয় পরিচয়পত্র-ধারীর এসএসসি, এইচএসসি বা সমমান সনদপত্র (যদি তাতে পিতা/মাতার নাম উল্লেখ থাকে) এবং জাতীয় পরিচয়পত্র-ধারীর পিতা, মাতা, ভাই ও বোনের জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রয়োজনে, সরেজমিন তদন্ত করতে পারবেন।

(৪) পিতা/মাতার নামের পূর্বে “মৃত” অভিব্যক্তিটি সংযোজন বা বিয়োজন করিতে চাইলে, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, পিতা/মাতার মৃত্যু সনদের সত্যায়িত অনুলিপি বা তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি ও জীবিত থাকার সমর্থনে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/কাউনিসলরের প্রত্যয়ন-পত্র জমা দিতে হবে।

(৫) ঠিকানা (বাসা/হোল্ডিং/গ্রাম/রাস্তা/ডাকঘর) সংশোধনের ক্ষেত্রে, সঠিক ঠিকানার স্বপক্ষে বাড়ির দলিল/টেলিফোন, গ্যাস বা পানির বিল/বাড়ি ভাড়ার চুক্তিপত্র/বাড়িভাড়া রশিদের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

(৬) রক্তের গ্রুপ সংযোজন বা সংশোধনের ক্ষেত্রে, তার স্বপক্ষে ডাক্তারি সনদপত্র জমা দিতে হবে।

(৭) শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র-ধারীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

(৮) টিআইএন/ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর/পাসপোর্ট নম্বর সংশোধনের ক্ষেত্রে, প্রয়োজনে, টিআইএন সনদ/ড্রাইভিং লাইসেন্স/পাসপোর্টের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

(৯) অন্যান্য যে কোনও সংশোধনের ক্ষেত্রে, উপরে উল্লেখিত সংশোধনের স্বপক্ষে উপযুক্ত সনদ, দলিল ইত্যাদির সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে।

(১০) আবেদনপত্রের সাথে দাখিল-কৃত অনুলিপিসমূহ নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিবর্গ সত্যায়ন করতে পারবেন: (ক) সংসদ সদস্য, (খ) স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, (গ) গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা, এবং (ঘ) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান।

বিশেষ দ্রষ্টব্য

নষ্ট বা হারানো পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে আগস্ট ২০১৫ পর্যন্ত কোন প্রকার ফী গুনতে হত না। ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৫ থেকে নষ্ট বা হারানো পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে একটি নির্ধারিত ফী দিতে হতে পারে। ফী গুলো নিম্নরুপঃ

(১)জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়নের জন্য নাগরিকদের (সাধারণ) ১০০ এবং জরুরি ক্ষেত্রে ১৫০ টাকা ফি দিতে হবে।

(২)হারানো বা নষ্ট হওয়ার কারণে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য প্রথম বার সাধারণ ২০০ টাকা, জরুরি প্রয়োজনে ৩০০ টাকা লাগবে। দ্বিতীয় বার সাধারণ ৩০০ টাকা, জরুরি প্রয়োজনে ৫০০ টাকা লাগবে। পরবর্তী যেকোনো সময়ের জন্য সাধারণ ৫০০ টাকা এবং জরুরি ক্ষেত্রে এক হাজার টাকা ফি দিতে হবে।

উল্লিখিত ফি নির্দিষ্ট খাতে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে বা নির্বাচন কমিশনের সচিবের অনুকূলে পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে বা কমিশন কর্তৃক নির্দিষ্ট নম্বরে মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে।

প্রাথমিকভাবে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। সবাই সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ট্রেজারি চালান করতে পারবে। পর্যায়ক্রমে অন্য সব ব্যাংকের সঙ্গেও চুক্তি করার পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।

বিস্তারিত তথ্যের জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন

https://services.nidw.gov.bd/login/loginHome



মন্তব্য চালু নেই