যেখানে মৃতদেহ “হাঁটিয়ে” নিয়ে যাওয়া হয় কবরের দিকে! (ভিডিও)

জম্বি বা মৃতদের জীবন্ত দেহে হেঁটে বেড়ানোর কথা শুধু গল্প কিংবা চলচ্চিত্রেই জানা যায়। কিন্তু প্রিয় পাঠক, এবার একটু নড়েচড়ে বসুন। কারণ, ইন্দোনেশিয়ার তোরাজা গ্রামের এক বিশেষ রীতি আপনাকে হতবাক করে দেবে। কারণ,এ গ্রামের সবাইকেই মারা যাবার পর ‘জম্বি’ হতেই হয়। এই গ্রামের কিছু মানুষের মৃতদেহদেরকে হাঁটিয়ে নেয়ার ক্ষমতা আছে!

তোরাজা গ্রামের মৃতদেহ সৎকারের এই অদ্ভুত পদ্ধতি জানার আগে জানা যেতে পারে এই গ্রামের মানুষের মাঝে ‘চলাফেরা করতে সক্ষম মৃতদেহ’র ধারণা কিভাবে এলো? প্রথম ধারণা হল, অনেক প্রাচীনকালে বিশ্বাস করা হত কোন মানুষ মারা গেলে তার যে স্থানটিতে মৃত্যু হয়েছে সেখানে তাকে সমাহিত করা যাবে না ও তার যে স্থানে জন্ম হয়েছে সেখানেই তাকে সমাহিত করতে হবে। কিন্তু কালক্রমে গ্রামবাসীরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এখন কেউ মারা গেলে তাকে তার জন্মস্থানে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু পথ খুব দুর্গম তাই কোন বাহনে নেয়া যায় না। এসময় ডাকা হয় সেই বিশেষ মানুষদের। তারা দুই পাশ থেকে ধরে ধরে সেই পচতে শুরু করা, শক্ত হয়ে আসা মৃতদের হাঁটিয়ে নিয়ে যেত তার জন্মস্থান, তার নিজ গ্রামের দিকে। শুধু তাই নয়, এই পুরো পথ জুড়ে অন্য কারো সেই মৃতদের উদ্দেশ্য করে ডাকার ব্যপারে কঠিন সতর্কবাণী ছিল। কারণ এটা করা হলেই মৃতদের দেহ ধ্বসে পড়তো। এর ফলে যাত্রা থাকতো অসম্পূর্ণ। চিন্তা করুন কি ভয়াবহ!

ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন

আরেকটি বিশ্বাস হচ্ছে, বাহ্যিকভাবে একজন মানুষের মৃত্যু হলেও মৃত্যুর পুরো ব্যপারটি সম্পন্ন হতে অনেক বছর লেগে যায়। তাই বেশ কয়েক বছর পর্যন্ত মৃতদের চূড়ান্ত সৎকার অনুষ্ঠানের জন্য তার পরিবার বিভিন্ন আয়োজন করতে শুরু করে। আর কোন পরিবার দরিদ্র হলে তাকে সেই চূড়ান্ত শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য অর্থ সংগ্রহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এর আগ পর্যন্ত মৃতদেহকে সাময়িকভাবে একটি কফিনে রাখা হয়। অর্থ সংগ্রহ হয়ে গেলে মৃতদেহকে তার জন্য বানানো নতুন কফিনের দিকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আবারো অবিশ্বাস্য!

ফিরে আসা যাক এই লেখার প্রচ্ছদের ছবিতে। ইন্টারনেটে আলোড়ন তৈরি করা এ ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজন মৃত মহিলাকে দুইজন মানুষ ধরে ধরে কফিনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মহিলাটি কি আসলেই মৃত? অনেকের ধরনা, এই ছবিটি সত্য নয়। কারো মতে এটা আসলে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত একজন মহিলার ছবি। কিন্তু তাকে কফিনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন? শুধু তাই নয়, এখন তোরাজা গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত ও মানুষের যেকোন বাহনে করে মৃতদেহ বহনের সামর্থ্য থাকলেও তারা এখনো আগের মতোই হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে হাঁটিয়ে তাদেরকে তাদের জন্মস্থানে নিয়ে যায়। এসময় তারা পশু বলি দেয়। অসমর্থিত সূত্র বলছে, এই বলি দেয়া প্রাণীদেরকেও এই গ্রামের কিছু মানুষ কিছু সময়ের জন্য জীবিত প্রাণীদের মতো হাঁটাতে পারে। উদ্ভট ও বীভৎস, তাই নয় কি?

ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন



মন্তব্য চালু নেই