যমুনায় তলিয়ে যাওয়া অসংখ্য মানুষকে ফিরিয়ে এনেছেন ইনি!
যমুনার ঘোলা জলের নিচে অবাধ বিচরণ তার। জলে সাঁতরে বেড়ানো ব্যাডমিন্টন কিংবা ক্রিকেট খেলার মতোই সহজ। আজও মাঝ রাতে দরজায় টোকা পড়ে। দরজা খুলতেই দেখা যায় পুলিশ, দমকল কিংবা বিপদে পড়া কোনও পরিবারের সদস্য দাঁড়িয়ে স্বজনকে বাঁচানোর আকুতি নিয়ে। কাউকে ফেরান না মুমতাজ খান। দিন-রাতের হিসাব না করে ঝাঁপিয়ে পড়েন জলে। খুঁজে নিয়ে আসেন দেহ। কখনও জীবিত, কখনও মৃত।
জলের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকেই। কোনও দিন কোনও প্রফেশনাল ট্রেনিং নেননি। ১২ বছর বয়সে প্রথমবার জলের নিচ থেকে তুলে এনেছিলেন শিক্ষক-পুত্রের মৃতদেহ। এরপর থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক আসতে শুরু করে মুমতাজের। ৫৬ বছর বয়সেও কাউকে ফেরান না তিনি। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন জীবিত-মৃত যে অবস্থায় মানুষ ফিরুক। পরিবারের কাছে অন্তত কিছু তো থাকে!
নিজের এই কীর্তির জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জীবন রক্ষক পদকও পেয়েছেন মুমতাজ। পেয়েছেন দিল্লি পুলিশের তরফে সাহসিকতার শংসাপত্রও। শুধু পাননি চাকরি। এটাই মুমতাজের জীবনের একমাত্র আক্ষেপ। এত কিছু করেও পুলিশে কিংবা দমকলে চাকরির সুযোগ পাননি তিনি। বহু চেষ্টা করার পরও শিকে না ছেঁড়ায় শেষে এক স্কুলে ড্রাইভারের চাকরি নেন মুমতাজ। সেই স্কুলেই আজ শরীরশিক্ষার শিক্ষক তিনি। পাশাপাশি স্থানীয় এক সুইমিং পুলে বাচ্চাদের সাঁতার শেখান। এখন আর রোজ জলে নামেন না মুমতাজ। তবে জলের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব আজও অটুট। দিল্লীর যমুনার তীরেই রোজ যোগভ্যাস করেন ফিট থাকার জন্য। যাতে আজও যেন কারও প্রয়োজনে পাশে থাকা যায়। সংবাদ প্রতিদিন
মন্তব্য চালু নেই