যমজ ভাইয়ের অবাক কাহিনি, সিনেমাকেও হার মানালেন!
যমজ ভাই মানে তো একই দিনে জন্ম। কিন্তু তা হলে একই দিনে জাতীয় পুরস্কার, একই দিনে চাকরি এমনটাও হয় নাকি! এর পরে আরও এক মিল দেখালেন ধরমচাঁদ, করমচাঁদ।
একই দিনে জিমনাস্টিক্সে জাতীয় স্তরে সেরার তকমা। একই দিনে নৌ সেনায় চাকরি। এ বার একই দিনে বিয়ে করে নজির সৃষ্টি করতে চলেছেন আদিবাসী দুই যমজ ভাই। চন্দ্রকোণা ২ নং ব্লকের হরিসিংপুরের জামবেড় গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষক শম্ভু মুর্মুর দুই যমজ সন্তান ধরমচাঁদ মুর্মু ও করমচাঁদ মুর্মু।
শম্ভুবাবাবুর দই মেয়ে, দুই ছেলে। মেয়েদের আগেই বিয়ে দিয়েছেন। ১৯৯২ সালে ১ এপ্রিল দুই ছেলে ধরমচাঁদ ও করমচাঁদের জন্ম। জন্মের পর থেকেই ওঁদের মধ্যে অসম্ভব মিল দেখতে পান শম্ভুবাবু ও তাঁর স্ত্রী কিরণ্ময়ী মুর্মু। স্বাভাবিক ভাবেই প্রাথমিক থেকে হাইস্কুল সর্বত্রই ভর্তির তারিখ একই হয়ে যায়। কিন্তু এর পরে অবাক করা মিল দেখা যায়। শম্ভু মুর্মু বললেন, ‘ধরম-করম দু’জনেই ভাল জিমনাস্টিক্স করত, সে জন্য ছোট বয়সেই ওদের জিমনাস্টিক্স প্র্যাকটিসের জন্য ছেড়ে দিতাম।’ দু’জনেই জেলা, রাজ্য হয়ে এক সময়ে জাতীয় স্তরে জিমনাস্টিক্স প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দু’ভাই। ২০১১ সালে হরিয়ানায় আয়োজিত সিনিয়র ন্যাশনাল জিমনাস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ-এ যোগ দিয়ে, একই দিনে আর্টিস্টিক জিমনাস্টিক্স বিভাগে প্রথম দু’টি স্থান দখল করেন দুই ভাই। কাকতালীয় ভাবে পরের বছরে একই দিনে ভারতীয় নৌ সেনায় চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পান ধরমচাঁদ ও করমচাঁদ। সেই থেকে নৌ বিভাগের স্টুয়ার্ড পদে চাকরি করছেন তাঁরা। এখন বিশাখাপত্তনমে কর্মরত।
দীর্ঘদিন পরে, গত মাসে ছুটি পেয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরেই দুই ভাই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। বাবা মায়ের মত নিয়ে গত মাসে একই দিনে গাড়ি ভাড়া করে ধরমচাঁদ ও করমচাঁদ বেরিয়ে পড়েন পাত্রী দেখতে। বিষ্ণুপুর ও দুর্গাপুরে পাত্রীও পছন্দ হয়ে যায় তাঁদের। জন্ম-সহ জীবনের উল্লেখযোগ্য অধিকাংশ কাজ একই দিনে। তাই এ বার একই দিনে শুভকাজটা সেরে ফেলতে চান এই দুই যমজ। রবিবার চন্দ্রকোণায় ম্যারেজ রেজিস্ট্রি অফিসারের চেম্বারে গিয়ে উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে সই-সাবুদ করে এলেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে। হাজির ছিলেন দুই পরিবারের কয়েকজন আত্মীয়ও।
ম্যারেজ অফিসার সমীরকুমার ঘোষ জানান, এখন নোটিশ দেওয়া হল। নিয়ম মেনে, ঠিক এক মাস পরে বিয়ের রেজিস্ট্রি হবে একই দিনে।-এবেলা
মন্তব্য চালু নেই