ম্যাচটা এখন ৭০ ভাগই শ্রীলঙ্কার হাতে : আসিফ আকবর

খেলায় আমি খুব হতাশ। সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে আরেকটু দায়িত্বশীল ক্রিকেট আশা করি। মাহমুদউল্লাহ-সাকিবদের আরেকটু দায়িত্বশীল হওয়া দরকার ছিল। সাকিবের পেছন দিকে খেলার অভ্যাসটা আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি। তবে মিরাজ ভালো খেলেছে। সময়মত ভালো খেলেছে। ও না থাকলে আজকে ফলোঅন এড়াতে পারতাম না।

আর মুশফিক অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেছে। ও একজন পার্টনারের জন্য পারলো না। আমার কাছে মনে হলো একটা জাহাজে একজন নাবিক আছে আর সে হলো মুশফিকুর রহীম। মাশাআল্লাহ ও খুবই ভালো খেলেছে। আমাদের বাকি ব্যাটসম্যানরা যদি ওর মতো খেলার চেষ্টা করতো তাহলে এমন অবস্থা হতো না। আমাদের আসলে আরেকটা মুশফিকের খুব অভাব।

তারা জানে বাংলাদেশের দুর্বলতা। আমাদের ব্যাটসম্যানরা শট খেলতে পছন্দ করে। আর এ সুযোগটাই তারা নিয়েছে। শুরুতেই সৌম্যের জন্য একটা ফাইন লেগ ও একটা ডিপ স্কয়ার লেগে ফিল্ডার রেখে ধারাবাহিকভাবে শট বল করতে থাকলো লাকমল।

তারা চেয়েছিল সৌম্য যেন পুল বা হুক করে। তাই করেছে এবং তারা সফল হয়েছে। যদিও ওই বলটা সৌম্য যতটা উঠবে আশা করেছিল আনইভেন বাউন্সের কারণে ততটা ওঠেনি। সৌম্যর আউটে আজকে আমার হাবিবুল বাশার সুমনের কথা মনে হয়েছে। তিনিও এভাবে প্রায় আউট হতেন।

সাকিবও আজকে হতাশ করলো। হয়তো ওটাই ওর ব্যাটিং স্টাইল; কিন্তু দলের অবস্থা যখন খারাপ থাকে তখন কিছুটা দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হয়। মুশফিক তো খেললো। মুশফিক ১৬১টা বল খেলে ৮৫ রান করলো।

লিটন দাসের আজকে সুযোগ ছিল নিজেকে দেখানোর। ছেলেটা দেশের মাটিতে এত ভালো ব্যাটিং করে। কিন্তু ওইখানে হলো না। দেখা যাক দ্বিতীয় ইনিংসে কী করতে পারে। তবে উইকেট যেমন আনইভেন হয়ে গেছে, তাতে শেষ দিনে ব্যাটিং করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।

তবে এ নিয়ে ভেবেও তেমন লাভ নেই। আমাদের আসলে সবসময়ই এমন হয়। আমাদের ব্যাটিংয়ে কোন না কোন দিকে একটা ঘাটতি থেকেই যায়। সেট ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যায়, না হয় কোন জুটি হয় না। জুটি না হলে টেস্ট ক্রিকেটে টিকে থাকা অনেক কঠিন। এটা আসলে ঘরোয়া ক্রিকেটে বড় দৈর্ঘের ম্যাচ না খেলার ফল।

ওদের কয়েকটা জুটি হয়েছে। মেন্ডিস-ডিকভেলা আউট হওয়ার পরও জুটি হয়েছে। আর আমাদের বলার মতো আজকে একটাই জুটি হয়েছে। টেলএন্ডারদের কাছ থেকে কিছু আশা করি। কমপক্ষে ১০-১২টা রান যদি করতে পারতো। যেটা ওদের ব্যাটসম্যানরা করেছে।

উইকেট এখন একটু আনইভেন। তাই আগামীকাল আমাদের পেসাররা একটু সুবিধা পাবে। তবে লাঞ্চের পর অথবা চা বিরতির আগে স্পিনাররা সুবিধা পাবে। কারণ আজকেই কিন্তু বেশ কিছু বল ঘুরেছে। ওরা ১২/১৩ ওভার পেস করেছে বাকি সব স্পিন বল করেছে। উইকেট যেমন হচ্ছে তাতে আমাদের চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করতে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। তার ওপর আমাদের চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং রেকর্ড ভালো না।

তারা হয়তো কাল ধুপ ধাপ মেরে আমাদের একটা বড় টার্গেট দেবে। চতুর্থ দিনের শেষে আর পঞ্চম দিনে খেলা কিন্তু খুবই কঠিন। এটা আমরা সবসময়ই ভয় পাই। ম্যাচ এখন আমাদের দিকে না। ৭০ ভাগই শ্রীলঙ্কার হাতে। আর আমাদের দিকে বলতে ড্রয়ের সম্ভাবনা ৩০ ভাগ।



মন্তব্য চালু নেই