মোদিকে বাংলাদেশে না আসার আহ্বান কাদের সিদ্দিকীর

‘অনির্বাচিত’ সরকারের আমন্ত্রণে মোদিকে বাংলাদেশ সফরে না আসার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম।

তিনি বলেছেন, ‘এই সরকারের আমন্ত্রণে ভারতের জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসতে পারেন না।’

মতিঝিলে বুধবার দুপুরে বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম তার চলমান অবস্থান কর্মসূচির ৩৬তম দিনে সংবাদ সম্মেলন করে এ আহ্বান জানান।

কাদের সিদ্দিকী ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এই সরকার বাংলাদেশের নিন্দিত সরকার। জনবিচ্ছিন্ন সরকারের আমন্ত্রণে আপনি বাংলাদেশে আসতে পারেন না। আসলে জনগণের ফুলের মালা পাবেন না, জনগণের জ্বালা পাবেন।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত দেশের ১৬ কোটি মানুষ আপনাকে (মোদি) আমন্ত্রণ না জানায়, ততক্ষণ আপনার আসা ঠিক হবে না। বাংলাদেশে এসে এই সরকারকে নৈতিক সমর্থন দেওয়া ঠিক হবে না।’

এ ছাড়া কাদের সিদ্দিকী তার অবস্থানের ৪০তম দিনে প্রধানমন্ত্রীকে সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য চিঠি দেওয়ারও ঘোষণা দেন। তবে এই চিঠি তিনি একটি দলের প্রধান হিসেবে নন, বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে রক্ত জড়িয়ে রয়েছে এমন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দিবেন।

কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি উনাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। উনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। কিন্তু তার আশপাশে যারা আছেন তারা শয়তান। আশপাশে শয়তান থাকলে ভালো থাকা যায় না।’

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি, জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলতে পারলে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না কেন? তাহলে কি বাংলাদেশ ভারতের করদ রাজ্য, এমন প্রশ্ন মনে জাগতেই পারে।’

কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। আপনি ১৫৪টি আসনে নির্বাচন দিন, যদি ১০০ জন জামানত না হারায় আমি যে পর্যন্ত বেঁচে আছি আপনার গোলামি করব। আর রাজনীতি করব করব না, রাজনীতি ছেড়ে দিব।’

কাদের সিদ্দিকী সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ৮ মার্চ মতিঝিলে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মরার আগে দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধাকে মতিঝিলে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। তার পরও যদি না আসতে পারেন, তাহলে যে যেখানে থাকবেন সেখানেই অবস্থান গ্রহণ করে শান্তির দাবি তুলুন।’

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলন থেকে মুক্তিযুদ্ধের এই কিংবদন্তি আগামী ৮ মার্চ অবস্থান কর্মসূচির ৪০তম দিনে শত্রু-মিত্র সবাইকে মতিঝিলে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দলীয় কর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শত্রুপক্ষ যদি কেউ আসতে চান- সবাই নিয়ে আমরা আলোচনা করতে চাই। সেখান থেকেই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিব।’

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে বঙ্গবীর বলেন, ‘সরকার যদি তার পতন আরও ত্বরান্বিত করতে চায় তাহলে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করবে।’

শেষ পর্যন্ত সরকার আলোচনা বসবেই এমন মন্তব্য করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনারা দেখবেন, সরকার শেষ পর্যন্ত আলোচনায় বসবেই। পৃথিবীকে দেখানোর মতো শান্তিও আমাদের দেশে আসবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদ আহমেদ, যুব আন্দোলনের আহ্বায়ক হাবিব উন নবী সোহেল, আতিকুর রহমান সাদেক, ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ত রিফাতুল ইসলাম দ্বীপ, যুগ্ম আহ্বায়ক কাওছার জামান প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই