মেয়েকে প্রেম থেকে সরাতে মায়ের আত্মহত্যা!

শাশুড়ির নির্যাতন, স্বামী নেশায় আসক্ত থাকার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন মেয়ে। এ অবস্থায় আত্মহত্যার হুমকি দেন মেয়ে। মেয়ের আত্মহত্যার হুমকি সহ্য করতে না পেরে মা নিজেই প্রাণ দিলেন।

মেয়ের আত্মহত্যার হুমকিতে মা জয়া সেন নিজেই আত্মহত্যূা করেন। জয়া সেন সঙ্গীত পরিচালক হিল্লোল দাস রাজীবের স্ত্রী।

এ ঘটনায় রমনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩০ মে সোমবার সকালে গণমাধ্যমকে তথ্যটি নিশ্চিত করেন রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান।

হিল্লোল দাস রাজীবের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানান, ছেলেমেয়েকে নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকতেন জয়া সেন। সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী মেয়ে রাজশ্রী দাস স্রিজার কিছুদিন আগে এক ছেলের সাথে প্রেমে পড়ে।

তিনি জানান, সে সম্পর্ক নিয়ে মা জয়া সেনের বরাবরই আপত্তি ছিল। ২৭ মে রাতে মেয়ের সাথে তার কথা কটাকাটিও হয়।

সেই সম্পর্ক থেকে সরে আসতে বললে মেয়ে স্রিজার উল্টো আত্মহত্যার হুমকি দেয়। সেই হুমকিতে ক্ষুব্ধ হয়ে মা জয়া সেন নিজেই ঘরের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।

ওসি মশিউর রহমান জানান, ২৭ মে রাতে ৩৩/বি, পশ্চিম মালিবাগে জয়া সেন ফ্যানের সিলিংয়ে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মলিবাগের ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তিনি জানান, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত ৩টার দিকে মারা যান তিনি। পরে রোববার দুপুরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মর্গে নেয়া হয়।

এ ঘটনায় রোববার রাতে রমনা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দয়ের করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

জানা যায়, সঙ্গীত পরিচালক হিল্লোল দাস রাজীবের সাথে ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয় জয়া সেনের। তখন জয়া সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তাদের সংসারে মেয়ে স্রিজা ছাড়াও শুভ নামে একটি ছেলে রয়েছে।

বিয়ের পরপরই শ্বশুর তার সব সম্পত্তি প্রিয় পুত্রবধূ জয়ার নামে লিখে দেন। এরপর থেকেই জয়া সেনের ওপর নির্যাতন শুরু হয় শাশুড়ির। সেই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বেশ কয়েকবার বাসা ছেড়ে চলেও যান তিনি।

জয়ার অভিমানের অন্যতম কারণ ছিল স্বামী রাজীবের পানীয় পান। শিক্ষিত জয়া কখনোই তা সহ্য করতেন না। কিন্তু স্বামী তাকে বুঝানোর চেষ্টা করতেন।

জানা গেছে, জয়া যেদিন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সেদিন সবার সঙ্গেই তিনি ভালো করে কথা বলেন। পরিচিতজনদের সঙ্গেও দেখা করেন। রাতের খাবার স্বামী রাজীবের জন্য টেবিলে রেখে যান। কথা কাটাকাটি হলেও মেয়েকে নিজের দু’টি ছবিও দিয়ে যান তিনি।

মায়ের মৃত্যুর পরও অনুতপ্ত নন মেয়ে স্রিজা। ওইদিন সকাল থেকেই তাকে ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। স্রিজা পরিচিত একজনকে বলে, ‘আমাকে এখন বিয়ে করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’



মন্তব্য চালু নেই