মেহেদির রং না মুছতেই সাদা শাড়ি
হাতের মেহেদি আর পায়ের আলতার রং না মুছতেই সাদা শাড়ি পরতে হলো নুপুরকে। বড় সাধ করে গত শুক্রবার তাকে বিয়ে দেওয়া হয় বিদেশ ফেরত ছেলে জাহিদ হোসেনের সঙ্গে। কেউ কি জানতো যে নুপুরকে মাত্র ছয় দিনের মাথায় বিধবা হতে হবে?
জাহিদের অকাল মৃত্যুতে দুই পরিবারের সবাই যেন কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। সবারই দুই চোখ দিয়ে অঝরে ঝরছে অশ্রু।
যশোরের মুনরামপুর উপজেলার চাকলা কাঠালতলার আব্দুল বারিকের এক মাত্র ছেলে জাহিদ হোসেন (২৭)। দীর্ঘ সাত বছর দুবাই ও মালয়েশিয়ায় থেকে গত ঈদের আগে বাড়ি আসেন। বাবা মায়ের ইচ্ছায় গত ২৪ অক্টোবর শুক্রবার তিনি বিয়ে করেন একই উপজেলার জয়পুর গ্রামে। স্ত্রীর নাম নুপুর। গত ২৬ অক্টোবর তিনি একটি মোটরসাইকেল কেনেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সেই মোটরসাইকেলে শ্যালককে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে বের হন।
তবে জাহিদ আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। বিকেলে জয়পুর গ্রামের রাস্তায় বৃদ্ধ এক নারী পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি রাস্তার পাশে একটি গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে ধাক্কা খান। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাকে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু জাহিদকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে চিকিৎসকরা শত চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হন। রাত ৮টার দিকে জাহিদ যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
জাহিদের অকাল মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ তার পিতা আব্দুল বারিকসহ দুই পরিবারের সবাই। জাহিদ ছিলেন তার পিতামাতার একমাত্র সন্তান।
বৃহস্পতিবার রাতে পিতার আবেদনের প্রেক্ষিতে জাহিদের লাশ তার পরিবারের কাছে বিনা ময়নাতদন্তে হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে মনিরামপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই