মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষের পথে
কক্সবাজারের উখিয়ার মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে। দীর্ঘ ১২০ কিঃমিঃ সড়কটির উখিয়া হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত সাগরের কুলঘেঁষে এ মেরিন ড্রাইভ সড়কটি নির্মিত হবে। আর মাত্র ২৮ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ অবশিষ্ট রয়েছে। মেরিন ড্রাইভ সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে উপকুলতীরবর্তী এলাকা জুড়ে অসংখ্য হোটেল-মোটেল, আবাসিক কটেজ ও হ্যাচারী শিল্পের জোন হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। এছাড়া এসড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হলে এখানকার ইনানী মৌজা সহ টেকনাফ উপজেলার সাগর পাড়ের জমির বেঁচা-কেনা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সাথে চড়া মূল্যে জমি বেঁচা-কেনা করতে পারবে বলে স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন চৌধুরী জানান, মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণ দ্রুত শেষ হলে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যবসা বানিজ্যের প্রসারতা বৃদ্ধি পেতে পারে। শুধু তাই নয়, সাগর থেকে জেলেরা মাছ সংগ্রহ করে তা সড়ক যোগে সরাসরি উখিয়া বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতে কোন অসুবিধা হবে না। উখিয়া-টেকনাফের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জন করা সম্ভব বলেও তিনি জানান।
সম্প্রতি সেতু ও সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের গত ১৫ জানুয়ারি মনখালী খালের উপর নির্মিত সেতু উদ্বোধনকালে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের দ্রুত মেরিন ড্রাইভ সড়কের কাজ শেষ করার তাগিদ দেন। সেতু মন্ত্রীর এ নির্দেশের পরপরই ১৬ইসিবির ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সেনাকর্মকর্তারা দ্রুত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
১৬ ইসিবির প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মানোয়ার ইসলাম বলেন, ৪৮ কিলোমিটার পর্যন্ত মাটির কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের শেষের দিকে অবশিষ্ট মেরিন ড্রাইভ সড়কের কাজ শেষ করা হবে বলে তিনি জানান।
তবে এখানকার এলাকাবাসীর প্রশ্ন আদৌ কি এ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। না কি বছরের পর বছর ফাইল বন্ধি হয়ে থাকবে।
দীর্ঘ ২২ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে শেষ হতে চলেছে সৈকতের তীর ঘেঁষে কক্সবাজারের ১২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেরিন ড্রাইভের কাজ। পর্যটন শহরকে আরো আকর্ষণীয় এবং দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে প্রায় একশো কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়ক তৈরীর কাজ শুরু হয় ১৯৯২ সালে।
একদিকে পাহাড় অপরদিকে সমুদ্র। মাঝখানে ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত। প্রকৃতির এ সৌন্দর্য ভ্রমণ পিপাসুদের উপভোগের জন্য এখানে রয়েছে পর্যটকদের থাকার সুব্যবস্থা। ১৯৯২ সালে মেরিন ড্রাইভ সড়কের কার্যক্রম শুরু হলেও নানা জটিলতায় কাজ শেষ হতে পার হয়ে যায় বছররে পর বছর। শেষ পর্যন্ত সরকারি বরাদ্দ পাওয়ায় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের ১৬ ইসিবির অধীনে নির্মাণ দ্রুতগতিতেই চলছে এ সড়কের কাজ।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা এ মেরিন ড্রাইভ সড়কটির কাজ শেষ হলে দেশের আর্থিক সামাজিক উন্নয়ন তরান্নিত সহ এলাকার ব্যবসা বানিজ্যের চেহারা পাল্টে যেতে পারে।
এদিকে স্থানীয় নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত উখিয়া টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ হলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ার পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
অবশ্যই বর্তমানে ৮৬ কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ হয়ে ৫৮ কিলোমিটার সড়কের কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে। অবশিষ্ট ২৮ কিলোমিটার সড়কের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে বলে ১৬ ইসিবির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
মন্তব্য চালু নেই