যশোর সদর ও অভয়নগরের সীমান্তবর্তী জগন্নাথপুর গ্রামে ৫ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষনের পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে লম্পটরা। শনিবার ভোরে জগন্নাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে ওৎপেতে থাকা অজ্ঞাত নরপশুরা তাকে পার্শ্ববর্তী খান বাড়ির পানের বরজের পার্শ্বের বাগানে নিয়ে ধর্ষন করে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে লাশটি ওই বাগানে ফেলে রেখে যায়।

পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ গতকাল বিকেলে ২ যুবককে আটক করেছে। এদিকে নরপশুদের লালসার শিকার হয়ে একমাত্র মেয়ের এ লোমহর্ষক মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেনা তার মা-বাবাসহ এলাকাবাসী। ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবরে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে অভিভাবকেরা। তারা অবিলম্বে ওই নরপশুদের চিহ্নিত করে ফাঁসির দাবী জানিয়েছেন।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভয়নগরের সিমান্তবর্তী জগন্নাথপুর গ্রামের হত দরীদ্র দিন মজুর আকন আলী মোল্যার একমাত্র মেয়ে জগন্নাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী সুরাইয়া খাতুন প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল শনিবার ভোরে বাড়ি থেকে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১০৩ নং জগন্নাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। সকাল ৯ টার দিকে ওই এলাকার আব্দুল কাদের খানের ছেলে মিল শ্রমিক টুটুল নিহতের পরিবারকে তাদের মেয়ে বাগানে পড়ে আছে বলে খবর দেয়।

খবর পেয়ে আকন আলী, তার স্ত্রী, বড় ছেলে ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে তাদের একমাত্র মেয়েকে গলায় ওড়না এবং মুখের মধ্যে মাটি ভর্তি অবস্থায় দেখে বাকহীন হয়ে পড়েন। পরে বসুন্দিয়া ফাড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পুলিশের ধারনা, শিশুটিকে চরম নির্যাতন করে ধর্ষন করা হয়েছে। এবং যাতে চিৎকার করতে না পারে এজন্য মুখে মাটি ভর্তি করে মুখ বন্ধ করে দিয়েছে লম্পটরা।

পরবর্তীতে নিজেদের অপকর্ম ফাঁস হওয়ার ভয়ে ওই শিশু কন্যাটিকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেছে তারা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে বসুন্দিয়া ক্যাম্প পুলিশ একই এলাকার আলী খা’র ছেলে আরিফুল (৩০) ও কাদের খাঁ’র ছেলে বিকুল খা (২৮) কে আটক করেছে। আটকের পর তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যশোর সদর থানায় প্রেরন করা হয়েছে বলে বসুন্দিয়া ক্যাম্পের ইনচার্জ জাহাঙ্গির হোসেন জানান। তিনি বলেন, মেয়েটিকে ধর্ষনের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্টে ধর্ষনের আলামত লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে ধর্ষনের ঘটনায় নিহত স্কুল ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে যশোর সদর থানায় মামলা করেছেন । যার মামলা নং ২৫। তাং ০৭-০২-২০১৪ ইং। এ ব্যাপারে যশোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মুঠোফোনে জানান, আটককৃত দুইজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে বিষয়টি গোপন রাখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, বাদী থানায় দায়েরকৃত এজাহারে ওই দুইজনকে সাসপেক্ট করেছেন। সে অনুযায়ী তাদেরকে আটক করা হয়েছে।