মুস্তাফিজরাই আইপিএল চ্যাম্পিয়ন
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেট ২০১৬ আসরের শিরোপা জিতে নিয়েছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। রবিবার রাতে (২৯ মে) আসরের ফাইনালে বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ৮ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানদের দল।
জয়ের জন্য বেঙ্গালুরুকে ২০৯ রানের টার্গেট দিয়েছিল হায়দ্রাবাদ। সেই লক্ষ্য তাড়া করে ক্রিস গেইল-বিরাট কোহলিদের নৈপুণ্যে প্রথমবারের মতো আইপিএল শিরোপা জয়ের প্রবল সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিল বেঙ্গালুরু। তবে মুস্তাফিজ-ভুবনেশ্বর কুমার-বিপুল শর্মা-বিরেন্দর সরনদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং কোহলিবাহিনীর স্বপ্ন গুড়িয়ে দিয়েছে; ৮ রানের জয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছে হায়দ্রাবাদ।
বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শিরোপা যুদ্ধে নেমেছিল দুই দল। খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বেঙ্গালুরুর এম চেন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে। ঘরের মাঠে টস হেরেছিল বেঙ্গালুরু। টসভাগ্যে জয়ী হায়দ্রাবাদের অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
পুরো আসর জুড়ে হায়দ্রাবাদের ব্যাটিং কান্ডারী হয়ে থেকেছেন অধিনায়ক ওয়ার্নার। ফাইনালেও কথা বলেছে তার ব্যাট। ৩৮ বল মোকাবেলা করে ৬৯ রান করেছেন এই অস্ট্রেলিয়ান তারকা। ইনিংসে ছিল ৮ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কা। এ ছাড়া ওপেনার শেখর ধাওয়ান ২৫ বলে ২৮, যুবরাজ সিং ২৩ বলে ৩৮ এবং আরেক অস্ট্রেলিয়ান তারকা বেন কাটিং মাত্র ১৫ বলে হার না মানা ৩৯ রান করেছেন। সব মিলিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রানের বড় সংগ্রহই গড়েছিল সানারাইজার্স হায়দ্রাবাদ।
বেঙ্গালুরুর পক্ষে ইংলিশ তারকা ক্রিস জর্ডান ৩টি ও ভারতের শ্রীনাথ অরবিন্দ ২টি উইকেট নিয়েছেন।
টুর্নামেন্টে বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইন ছিল সবচাইতে শক্তিশালী। বিরাট কোহলি-ক্রিস গেইল-এবি ডি ভিলিয়ার্স ও শেন ওয়াটসন; এই ৪ ব্যাটসম্যানের সমন্বয়ে গড়া বেঙ্গালুরুর ব্যাটিং লাইনের সামনে অসহায় আত্মসমাপর্ন করতে হয়েছে প্রতিটি দলকেই। হায়দ্রবাদের ২০৮ রানের পুঁজিও তাই নিরাপদ মনে হচ্ছিল না শুরুতে। জবাব দিতে নেমে গেইল ও কোহলির উদ্বোধনী জুটি যেন মামুলি টার্গেট বানিয়ে তুলেছিল ২০৯ রানের লক্ষ্যকে। মাত্র ৩৮ বলে ৭৬ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেছেন ক্যারিবীয় তারকা গেইল; ৪ বাউন্ডারি ও ৮ ছক্কায়। অপর প্রান্তে বেঙ্গালুরু অধিনায়ক কোহলি ৩৫ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় করেছেন ৫৪ রান। তাদের উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ১০.২ ওভারে ১১৪ রান পেয়েছিল বেঙ্গালুরু।
তবে একাদশতম ওভারের তৃতীয় বলটিতে আউট হয়ে যান গেইল। ১২.৫ ওভারে দলীয় ১৪০ রানে বিদায় নেন কোহলিও। এরপরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় হায়দ্রাবাদের বোলাররা। শেষ অব্দি তাদের নৈপুণ্যে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০০ রান তুলতে সক্ষম হয় বেঙ্গালুরু। হায়দ্রাবাদ ম্যাচ জিতে নেয় ৮ রানে। আইপিএলে এই প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল দলটি।
ম্যাচে হায়দ্রাবাদের সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা বেন কাটিং। ৪ ওভারে ৩৫ রান খরচ করে ২ উইকেট নেন তিনি। বাংলাদেশের তরুণ পেসার ও আইপিএলের সেরা তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতা মুস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে পেয়েছেন শেন ওয়াটসনের উইকেটটি। আরও একটি উইকেট পেতে পারতেন তিনি। কিন্তু ওয়ার্নার ক্যাচ মিস করায় সেই উইকেট পাওয়া হয়নি মুস্তাফিজের। এরপরও আসরের শুরু থেকে বল হাতে দারুণ ঝলক দেখিয়ে মোট ১৭ উইকেট নিয়ে এবারের আইপিএলের সেরা তরুণ ক্রিকেটারের পুরস্কারটা ঠিকই জিতে নিয়েছেন ক্রিকেট বিশ্বে বর্তমানের সবচাইতে আলোচিত এই বাংলাদেশি পেস বিস্ময়; যিনি ইতোমধ্যে পেয়ে গেছেন ‘কাটার মাস্টার’ উপাধি।
মন্তব্য চালু নেই