মুসলমানদের ভয় পান তসলিমা নাসরিন!
বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন এখন অবস্থান করছেন ভারতের দিল্লিতে। তিনি নাকি মুসলমানদের দেখেই অনেক ভয় পান! আর এই ভয়ের কারণে তিনি দিল্লির বাইরে কোথাও যেতে চান না! এসব বিষয় নিয়ে আরো অনেক কথা লিখে আজ রোববার রাত প্রায় ১১ টার দিকে তার ফেসবুক ফেইজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তসলিমার ফেসবুক থেকে সেই স্ট্যাটাসটি এমটিনিউজ২৪-এর পাঠকদের জন্য হুবহু তুলেধরা হলো।
‘ভেবেছিলাম দিল্লির বাইরে বুঝি কোথাও যাওয়া চলবে না। কত কত আমন্ত্রণ যে ফিরিয়ে দিয়েছি। দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকেও ডাকা হতো, সোজা না বলে দিতাম। তো এবার দিল্লিতে টাইমস অব ইণ্ডিয়ার লিটারেচার ফেস্টিভেল আর দিল্লি লিটারেচার ফেস্টিভেলে যোগ দেওয়ার পর দ্বিধা কিছুটা কেটেছে।
মালায়ালি লেখক সচ্চিদানন্দনের আমন্ত্রণে কেরালা লিটারেচার ফেস্টিভেলে যোগ দিতে চলে গেলাম কালিকুটে। সচ্চিদানন্দন নিজে ফেস্টিভেলের ডিরেক্টর। সচ্চিদানন্দন বলেই রাজি হয়েছি। তা না হলে দিল্লির বাইরে যাওয়ার, তাও আবার প্রচুর মুসলিম আছে এমন জায়গায়, যাওয়ার প্রশ্নই উঠতো না।
তারপরও হায়দারাবাদের ঘটনা মনে পড়ে ভয় ভয় লাগছিল। কিন্তু ফেস্টিভেলের আয়োজকরা, সচ্চিদানন্দনও, আমাকে আশ্বাস দিলেন। বললেন, কালিকুট ভালো জায়গা, এখানের মুসলিমরা অনেক শান্তিপ্রিয়। আমার ওপর কোনও আক্রমণ হবে না। শেষ পর্যন্ত গেলাম। কালিকুটে নেমে দেখি, আমার জন্য অগুণতি পুলিশ এয়ারপোর্টে। আরও অবাক কাণ্ড। শত শত টুপিপড়া মুসলমান দাঁড়িয়ে আছে। ওরা কি আমাকে মারতে এসেছে নাকি আমার ডিপোর্টেশন চেয়ে মিছিল করতে এসেছে! এয়ারপোর্টের কর্তারা জানালেন ওরা ওদের কোনও এক ধর্মগুরুকে রিসিভ করতে এসেছে, ধর্মগুরু আসছে হায়দারাবাদ থেকে। আমি যত তাড়াতাড়ি পারি এয়ারপোর্ট থেকে বেরোতে চাইছি। আমার গাড়ির সামনে পেছনে পুলিশের প্যাঁ পুঁ গাড়ি। দ্যা রাভিজ নামের এক পাঁচতারা হোটেলে নিয়ে এলো। হোটেলেও আমার দেহরক্ষী-পুলিশে গিজ গিজ করছে। আয়োজকদের বললাম, পুলিশ কমিয়ে দাও। এত পুলিশ দেখে আমার দমবন্ধ লাগছে। আমি ভিআইপি নই। ডেথথ্রেট আছে বলে পুলিশ রাখতে হয়। কিন্তু পুলিশের সংখ্যার তো একটা সীমা আছে।
হোটেল আমাকে স্বাগত জানালো। গলায় একটা এলাচ আর লবঙ্গের মালা পরিয়ে দিল। কপালে লাগিয়ে দিলো চন্দনের ফোঁটা। এলাচের মালা আমি বোধহয় প্রথম পরেছি।
অন্য রাজ্যে দেখিনি, কিন্তু কেরালায় দেখলাম বেশ ক’জন মহিলা পুলিশ আমার বডিগার্ড। মহিলাদের কোমরে পিস্তল। দেখে ভালো লাগলো।
কেরালায় আগেও গিয়েছি আমি, তবে কালিকুটে এই প্রথম। কেরালায় আগে যে জিনিসটা লক্ষ্য করেছি, এবারও করলাম, সবাই হয় মালায়ালাম বলবে নয়তো ইংরেজি বলবে, কিন্তু হিন্দি বলবে না।’
মন্তব্য চালু নেই