মুমিনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ ‘ইয়াক্বিন’
আল্লাহ তাআলা মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টি সেরা জীব হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। যারা তাঁকে একক এবং একমাত্র সৃষ্টিকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করেছে, তারাই দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ ‘ইয়াক্বিন বা পরিপূর্ণ বিশ্বাস’ অর্জন করতে সামর্থ হয়েছে। অর্থাৎ ইবাদাত-বন্দেগিতে শুধুমাত্র আল্লাহর ধ্যন-জ্ঞান ছাড়া অন্যকোনো চিন্তা চেতনা থাকবে না। এমন ধ্যান-জ্ঞানের কিছু নমুনা তুলে ধরা হলো-
>> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত যায়েদ ইবনে হারেসাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, প্রত্যেকটি জিনিসের একটি মূল তত্ত্ব আছে, তোমার ঈমানের মূল তত্ত্ব কি? তিনি বলেছিলেন, ‘আল্লাহর আরশের ইয়াক্বিন আমার অন্তরে এত বেশি যেন আমি স্বচক্ষে তা দেখছি।
এ জন্যই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত করো যেন তুমি তাঁকে দেখছো। আর যদি তুমি তাকে দেখতে না পাও, তবে একথা বিশ্বাস রাখ যে, তিনি তোমাকে দেখছেন।
>> হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু এভাবে দোয়া করতেন যে, হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান, ইয়াকিন এবং দ্বীন ইসলামকে বুঝার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দিন।` (মুসনাদে আহমাদ)
>> হজরত সুফিয়ান সাওরি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, যদি কারো অন্তরে সত্যিকার অর্থে আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ ইয়াক্বিন (বিশ্বাস) এসে যায় তবে সে জান্নাতের আকাঙ্ক্ষা এবং দোজখের ভয়ে অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে পড়ে।
এবং যখনই ইয়াক্বিনের নিয়ামাত অর্জিত (বিশ্বাস পরিপূর্ণ) হয়, তখন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়। জাগতিক বিষয়ের প্রতি মন আকৃষ্ট থাকে না। আধ্যাত্মিক উন্নতির সাধনা বৃদ্ধি পায়। পরকালীন জীবনের সাফল্যের জন্য ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তখন ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার জীবনের লাভ-ক্ষতি ঐ ব্যক্তির নিকট গুরুত্ব পায় না।
তাইতো পরকালের কল্যাণকামী মানুষের জন্য ইয়াক্বিন হলো বিশেষ সম্পদ। যারা এ সম্পদে সমৃদ্ধ হয়, তারাই প্রকৃত মুমিন। তাঁরাই দুনিয়া এবং আখিরাতে কামিয়াবী লাভ করে। কুরআন হাদিসের জান্নাতের সুখবরও তাদের জন্য নির্ধারিত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইয়াক্বিন তথা পরিপূর্ণ ঈমান লাভ করা তাওফিক দান করুন। আমিন।
মন্তব্য চালু নেই