মুক্ত থাকুন হাঁপানির কষ্ট থেকে
বসন্তের শেষ আর গ্রীষ্মের শুরুর দিকটা প্রকৃতি বড্ড রুক্ষ্ম থাকে। এসময় আমাদের চারপাশের পরিবেশে শ্বাসনালীর উত্যক্তকারী বস্তু নিশ্চিতভাবেই বেশি থাকে। ঘরের ভেতর ঘরোয়া জীবাণু মাইট, ছত্রাক, পোকা মাকড়ের বিষ্ঠা, বাতাসে ঘাসের বা ফুলের রেণু থাকে। এছাড়া থাকে শ্বাসনালীর উত্যক্তকারী কিছু পদার্থ, যেমন এলোমেলো বাতাস, ধোঁয়া ও ধূলাবালি। রাস্তায় চলা গাড়ি বাতাস ভরিয়ে ফেলে ধূলায়। এছাড়া রান্নাবান্নার ধোঁয়া বা সিগারেটের ধোঁয়া হাঁপানির প্রকোপ আরও বাড়িয়ে দেয়। আর তাই এ ঋতুতে বিভিন্ন বয়সী এলার্জি জনিত হাঁপানি রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়।
এলার্জি জনিত হাঁপানি হলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যেমন, মুখে ও গলায় খুসখুস করে, কাশি হয়, শ্বাসকষ্ট হয়, বুকে চাপ অনুভব হয়, শ্বাস প্রশ্বাসের সময় গলায় শোঁ শোঁ শব্দ হয়, হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে পানি ঝরে, নাক বন্ধ হয়ে যায়সহ আরও অনেক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এলার্জি জনিত কারণে নাক থেকে শুরু করে ফুসফুস পর্যন্ত শ্বাস তন্ত্রে প্রদাহ হয়। ফলে শ্বাসনালীর ভেতরের দিক কিছুটা ফুলে যায় এবং শ্লেষ্মার উৎপন্ন হয়। শুস্ক বাতাসের জন্য এই শ্লেষ্মা আরও গাঢ় হয়। ফলে শ্বাসনালী সরু হয়ে যায়। শ্বাস টানতে বা ছাড়তে খুবই কষ্ট হয়। প্রতিরোধক হিসেবে যা করতে পারেন-
– বাড়িঘরের শ্বাসনালীর উত্যক্তকারী বস্তু কমাতে হবে। ঘরের ধূলাবালি ঝেড়ে মুছে পরিস্কার রাখতে হবে।
– ঘরোয়া জীবাণু মাইট কমানোর চেষ্টা করুন। নিয়মিত কাপড় চোপড় ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। নিয়মিত রোদে দিন কাঁথা কম্বল, লেপ, তোষক, বিছানার চাদর, বালিশের কাভার; সপ্তাহে অন্তত একবার।
– দরজা জানালার পর্দা, মশারি- এগুলোও নিয়মিত ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিন।
– অতিরিক্ত ধুলা ধরে রাখা কার্পেট, ম্যাট ঘর থেকে সরিয়ে ফেলুন।
– সম্ভব হলে আপনার ঘর ভ্যাক্যুয়াম ক্লিন করুন সপ্তাহে একবার।
– বাইরে চলাচলের সময় মাস্ক ব্যবহার করুন।
– ঘন ঘন হালকা গরম পানি বা স্বাভাবিক পানি পান করুন। এতে শ্বাসনালীতে তৈরি হওয়া শ্লেষ্মা পাতলা থাকবে। তাতে কাশি কমবে, শ্বাসকষ্ট কমবে।
– চিকিৎসকের পরাশর্শমত কিছু ওষুধ সেবন করেও হাঁপানি প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
স্কিন টেস্টের মাধ্যমে এলার্জেন সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তা এড়িয়ে চলুন। এসব ব্যবস্থা হাঁপানির চিকিৎসা নয়, প্রতিরোধ ব্যবস্থা মাত্র। হাঁপানিতে আক্রান্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে পরামর্শমত ওষুধ সেবন করতে হবে।
মন্তব্য চালু নেই