মুকুল কি অঙ্কুরেই ঝরে যাবে?

মাসুদ কায়সার। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০তম ব্যাচের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তিনি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণজয়ী এ্যাথলেট। আকস্মিক এক দুর্ঘটনায় মাসুদের মেরুদণ্ডের ২টি হাড় ভেঙ্গে গেছে। তার দুটি পা এখন অবশ হয়ে গেছে। বর্তমানে সে ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি। আগামীকাল দুপুর ২ টায় তার মেরুদণ্ডের অপারেশন হবে।

ওর ডাক নাম মুকুল। মুকুল কি মুকুলেই ঝরে যাবে? প্রশ্ন তার বন্ধুদের।

মুকুলের বাবা মারা গেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগেই। তার মা গৃহিনী। খেলোয়াড় হিসেবে মুকুল বিজেএমসিতে চাকরি করে ও প্রাইভেট পড়িয়ে লেখাপড়ার খরচ চালায়। আসুন আমরা সবাই মুকুলকে উদ্ভাসিত হতে সাহায্য করি।


তার সাথে যোগাযোগের ঠিকানা :

মাসুদ কায়সার মুকুল, বেড নং- ১১, ৬ষ্ঠ তলা, ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল। রিং রোড, শ্যামলী। মোবাইল ০১৭১০৩২৪৮৯০ (মুকুলের মা) মাসুদ কায়সার মুকুলের বিকাশ নাম্বার- ০১৭১০৩২৪৮৯০।


 এই উদীয়মান তারকার যা অর্জন

২০০৭ সালে এ এ্যাথলেটে জাতীয় দলে খেলার ডাক আসে মুকুলের। ২০০৮ সালে শ্রীলংকার সাব- গেমস এ সর্ব কনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে খেলায় ডাক আসলেও এসএসসি পরীক্ষা থাকায় সেটি আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু কয়েকদিন পরেই মুকুলের শিক্ষা জীবনের ক্যারিয়ারে ঘটে অভূতপূর্ব সাফল্য। বিকেএসপির শিক্ষার্থীদের মধ্যে এসএসসিতে প্রথম এ প্লাস অর্জন করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন তিনি।

২০০৮ সালে জাতীয় পর্যায়ে হাইজাম্পে ২য় স্থান অর্জন করে মুকুল। ২০১০ সালে ঢাকার সাব গেমস এর টিমে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে খেলার সুযোগ হয়। প্রকৃতিপ্রেমী মুকুল এইচএসসি পরীক্ষায় ৪.৯০ পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও পরবর্তীতে চলে আসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

জাহাঙ্গীরনগরে ভর্তি হওয়ার ১০ দিনের মাথায় ধরা দেয় আরেক সাফল্য, ২০১১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় হাই জাম্পে প্রথম স্থান অর্জন করেন। এরপর থেকে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় প্রতি বছরই থাকে কৃতিত্বের স্বাক্ষর। ২০১২ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় হাই জাম্পে প্রথম এবং ট্রিপল জাম্পে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে। ২০১৩ সালে বুয়েটে অনুষ্ঠিত আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় হাই জাম্পে প্রথম স্থান অর্জন।

সর্বশেষ ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ও বুয়েটে অনুষ্ঠিত আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় হাই জাম্পে টানা চতুর্থ বারের মত প্রথম স্থান অর্জন যা একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হয়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ গেমস এ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশগ্রহণ এবং সেখানে তৃতীয় স্থান অধিকার করে মুকুল। যেখানে সারা বাংলাদেশ থেকে সকল ক্লাব, প্রতিষ্ঠান, আর্মি, নেভী, বিকেএসপির শিক্ষার্থীরা ছিল।

নিজের ঝুলিতে যে পুরস্কার জমা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বিকেএসপির ২০০৬ সালে বেষ্ট প্লেয়ার এ্যাওয়ার্ড। জুনিয়র লেভেলে সেরা খেলোয়াড় এ্যাওয়ার্ড। আ্যাথলেটিকস এ্যাওয়ার্ড। জাতীয় ইন্টার কলেজ ডিবেট এ রানার্সআপ হওয়ার এ্যাওয়ার্ড।

মুকুল স্বপ্ন দেখেন, তার ভাষায়, ‘টেকসই সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করার পাশাপাশি আজীবন খেলাধুলার সঙ্গে দূর থেকে হলেও থাকতে চাই।’

আসুন আমরা বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়ে মুকুলের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখি।



মন্তব্য চালু নেই