মিস্ত্রিদের মজুরি দিতে টাকা ধার নিয়েছেন পর্নো মিত্র!
দশদিন হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের। সাধারণ মানুষ এখনও নাজেহাল। এটিএম আর ব্যাঙ্কে হত্যে দিয়ে দিন কাটছে তাঁদের। এর প্রভাব টলিউডেও পড়েছে। তারকারাই বা এই পরিস্থিতিতে দিন গুজরান করছেন কী করে? স্মার্টফোন অনেকের কাছেই সুরাহা। কিন্তু নগদ টাকার প্রয়োজনও অবহেলা করার মতো নয়! কারও আবার বাড়িতে অনেক টাকাই নগদে রাখা আছে। কেউ আবার বললেন, অ্যাকাউন্ট খালি। চাইলে অন্যকে ভাড়া দিতে পারেন!
পার্নো মিত্র
কী অবস্থা?
খুব খারাপ! আমি বাড়ি বদল করছি। নতুন বাড়িতে এখনও টুকটাক কাজ চলছে। মিস্ত্রিদের টাকা দেওয়ার জন্য আমাকে ধার করতে হয়েছে। তাঁরা তো চেকে নেবেন না! সুতরাং বুঝতেই পারছেন পরিস্থিতি।
চলছে কীভাবে?
কার্ডে যতটা পারা যায় চালাচ্ছি। কিন্তু বাড়ির জন্য আমাকে কিছু নগদ তুলতেই হতো! সেই কারণে চেক হাতে ব্যাঙ্কে দৌড়লাম, আর কী!
নগদ কত?
জাস্ট কিচ্ছু নেই। ব্যাঙ্কের লোকেরা পর্যন্ত অবাক হয়ে গিয়েছেন নায়িকার বাড়িতে কোনও নগদ টাকা নেই শুনে!
অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়
কী অবস্থা?
কার্ড সোয়াইপ করেই কাজ চালাচ্ছি। তবে আমার লাইফ-স্টাইল যেমন, তাতে নগদ টাকার খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না। পার্কিংয়ে গাড়ি রাখা কিংবা টুকটাক জিনিসপত্র কেনা ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে কার্ডেই কাজ চালিয়ে নিই।
চলছে কীভাবে?
ব্যাঙ্কে লাইন দিয়ে একটা দু’হাজার টাকার নোট পেয়েছি। কিন্তু সেই টাকা খরচ করতে পারছি না। দু’হাজার টাকার খুচরো কে দেবে? কিছুদিন আগে দু’হাজারের নোট পাওয়া যাচ্ছিল না। আর এখন নোট মিললেও দু’হাজারের খুচরো মিলছে না।
নগদ কত?
বাতিল নোটে প্রায় ৫০ হাজার টাকা বাড়িতে
রাখা ছিল। আট হাজার মতো খরচ করতে পেরেছি। এখনও ৪৮ হাজার টাকা মতো রয়ে গিয়েছে। পকেটে ব্যবহারযোগ্য ১৮০০ টাকা নিয়ে ঘুরছি!
সম্পূর্ণা লাহিড়ী
কী অবস্থা?
আমার খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলতে হয়নি।
চলছে কীভাবে?
কার্ড দিয়েই সব কাজ চালিয়ে নিচ্ছি। এই ক’দিন স্পেনসার থেকেই বাজার করেছি। তারপর বিগ বাস্কেটের বিজ্ঞাপন দেখে ওখানে অর্ডার করলাম। বাড়ি এসেই সব দিয়ে গেল।
নগদ কত?
নগদ তো ছেড়ে দিন, আমার অ্যাকাউন্টেও টাকা নেই! অনেকের কাছে শুনছি, টাকা রাখার জন্য তাঁরা জায়গা খুঁজছেন। কেউ চাইলে আমার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন!
তনুশ্রী চক্রবর্তী
কী অবস্থা?
মুশকিল তো একটু হচ্ছেই। বাড়ির কাজ চালাতে সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু আমার দু’টো রেস্তোরাঁ রয়েছে। সমস্যাটা সেই জায়গায়। ব্যবসা এখন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া সবকিছু তো কার্ডে হয় না। কিছু ক্ষেত্রে নগদ প্রয়োজন পড়ছে বটে।
চলছে কীভাবে?
বাড়িতে কিছু নগদ টাকা ছিল। সেগুলো বদল করিয়ে আনা হয়েছে। আমার নিজের খুব একটা নগদ টাকার দরকার পড়ে না। সবকিছু কার্ড দিয়েই হয়ে যাচ্ছে।
নগদ কত?
বাড়িতে যেটুকু ক্যাশ ছিল সেটা বদল করিয়ে এনেছি। আমার কোনও কালো টাকা নেই। সব সাদা। সেই সাদা টাকা তুলতেই তো হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি!
লগ্নজিতা চক্রবর্ত্তী
কী অবস্থা?
এই পদক্ষেপের পিছনে যে নরেন্দ্র মোদীর স্বার্থ রয়েছে, সাধারণ মানুষের জন্য যে এটা ক্ষতিকর হতে পারে, সে সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল। তবে এই মুহূর্তে নিরাশাবাদী হতে ভাল লাগছে না। তাই আশা করছি, যা হবে যেন দেশের ভালর জন্যই হয়! যদিও যা পড়ছি-শুনছি, তাতে সবটাই ভাল হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না!
চলছে কীভাবে?
আমার কোনও অসুবিধে হচ্ছে না। কারণ আমার নিত্যদিনের খরচ খুব কম। চার-পাঁচশো টাকা কাছে রয়েছে। তাতেই চলে যাচ্ছে দিব্যি!
নগদ কত?
পাঁচ-ছ’হাজার টাকা ছিল বাড়িতে। ঘোষণার পরদিনই ব্যাঙ্কে জমা করে দিয়েছি।
শোলাঙ্কি রায়
কী অবস্থা?
আমরা যাঁরা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের এটিএমের লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তোলাটা সমস্যার। ১০০ টাকার নোটও পর্যাপ্ত মিলছে না। গাড়ির তেল ভরতেও সমস্যা হচ্ছে। বুঝে খরচ করছি।
চলছে কীভাবে?
কার্ড দিয়েই ম্যানেজ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছু জায়গায় তো নগদ টাকাই দিতে হয়। সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন ইন্ডাস্ট্রির টেকনিশিয়ানরা। ওঁদের অনেকটা পেমেন্টই নগদে হয়। তাই অনেক সময়ই ওঁদের পেমেন্ট পিছিয়ে দিতে হচ্ছে।
নগদ কত?
আমার বাবা-মা দু’জনেই অসুস্থ। তাই বাড়িতে ক্যাশ টাকা রাখতেই হয়। আমার টাকাপয়সার ব্যাপারটা মা-ই দেখাশোনা করেন। তবে ধীরে ধীরে ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
রণিতা দাস
কী অবস্থা?
ডেবিট কার্ডটা রয়েছে বলে বাঁচোয়া। না হলে যে কী হতো! সরকার থেকে বলা হচ্ছে, ওষুধের দোকানে বাতিল ৫০০ বা ১০০০ টাকার নোট নেওয়া হবে। কিন্তু অনেক জায়গাতেই সেটা নেওয়া হচ্ছে না। আমাকেই একাধিকবার খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছে।
চলছে কীভাবে?
নিত্য প্রয়োজনীয় কিংবা অত্যন্ত জরুরি জিনিস ছাড়া কোনও কিছু এই মুহূর্তে কিনছি না। এমন অবস্থা, ১০০ টাকা খরচ করার আগেও দু’বার ভাবতে হচ্ছে। চেষ্টা করছি কার্ড সোয়াইপ করে জিনিস কেনার।
নগদ কত?
এই মুহূর্তে বাড়িতে কোনও বাতিল টাকা নেই! সব টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে দিয়েছি।-এবেলা
মন্তব্য চালু নেই