মিঠাপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের রাফি কোচিং সেন্টারের দৌরাত্ম্য

রংপুরের মিঠাপুকুরে জমে উঠেছে কোচিং সেন্টার ব্যবসা। কৌশলে এক শ্রেণির শিক্ষক কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে কোচিং সেন্টার মুখি করাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়েও কোচিং সেন্টারে চলছে পাঠদান। এতে, আশপাশের বিদ্যালয়গুলোতে দ্বিতীয় প্রিয়ডের পর দেখা মিলছেনা শিক্ষার্থীদের। অনুমোদন বিহীন এসব কোচিংয়ে প্রতিদিন সকালের পাঠদান শেষ হয় সাড়ে ১০টায়। দ্বিতীয় শিফটে পাঠদান শুরু হয় বিকেল ৩টায়। এমন অবস্থা মিঠাপুকুরের রাফি কোচিং সেন্টারের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাফি কোচিং সেন্টারটির প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহি পরিচালক কামরুল হাসান সাজু। তিনি মিঠাপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ১৯৯৬ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন রাফি কোচিং সেন্টারটি। এখন উপজেলা সদরে ডাকঘর সড়কে কোচিং সেন্টারটির অবস্থান। বর্তমানে সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৪৯০ জন। এদের মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগেরও বেশি শিক্ষার্থী মিঠাপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের। ষষ্ঠ শ্রেণিতে মাসে প্রতিজনের ফি ৪০০ টাকা, সপ্তমে ৪৫০, অস্টমে ৫০০, নবম ও দশম শ্রেণিতে ৫৫০ টাকা করে নেওয়া হয়।

এভাবে প্রতিমাসে কামরুল হাসান সাজু কোচিংটি থেকে আয় করেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা। কোচিং সেন্টারে পাঠদানের জন্য রয়েছে ২১ জন শিক্ষক। নির্বাহি পরিচালকসহ এদের ২ জন মিঠাপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। বাকীদের কেউ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, কেউবা অধ্যায়রত শিক্ষার্থী।

রাফি কোচিং সেন্টারে শিক্ষক ফিরোজ মিয়া বলেন, কোচিং সেন্টারে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখা করার কারণে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ফলাফল ভাল হচ্ছে। কোচিং সেন্টারের কারণে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ক্লাস করেনা-এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক সময় পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ধরে রাখার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। এতে, আমাদের দোষ কিসের?

পূর্ণ চন্দ্রের মেয়ে পূর্ণিমা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের অস্টম শ্রেণির ছাত্রী। পূর্ণ চন্দ্র বলেন, বিদ্যালয়ে ঠিকভাবে ক্লাশ না হওয়ায় আমি মেয়েকে কোচিং সেন্টারে দিয়েছি।

ওই কোচিং সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহি পরিচালক কামরুল হাসান সাজু বলেন, আমি কেন অনেকেই কোচিং সেন্টার চালান। মিঠাপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য রঞ্জু শাহ্ বলেন, কোচিং সেন্টারগুলোর কারণে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিত কমে গেছে। অনেক শিক্ষকই কোচিং ব্যবসার সাথে জড়িত।

মিঠাপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্ হাবিব-ই আযম বলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি সিধান্তে একাধীকবার কোচিং বন্ধের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠানের যেসকল শিক্ষক কোচিং ব্যবসার সাথে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা. হারুন-অর রশীদ বলেন, ইতোপূর্বেও এধরনের অভিযোগ পেয়েছি। আমি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি, সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোন ছাত্রছাত্রী বাইরে থাকতে পারবেনা। বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষাক কোচিং ব্যবসার সাথে জড়িত থাকতে পারবেনা। এরপরও এমনটা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই