মায়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভেঙে গেছে, কী করব?

প্রিয় ক্যারোলিন,
আমি ১৭ বছর বয়সী মেয়ে। বর্তমানে আমি সিনিয়র হাইস্কুলে পড়ছি। সমস্যাটি আমার মাকে নিয়ে। আমি কয়েকদিন আগেও আমার মাকে আমার সো বন্ধু বলে মনে করতাম।

এরপর একটি ঘটনা ঘটলো, যা আমাদের মাঝে বিভেদ তৈরি করেছে। একটা ঘটনায় আমার মা এতই রেগে গিয়েছেন যে, আমি আর তার সঙ্গে থাকতে চাইছি না। আমার এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করছি। কিন্তু বিষয়টি আমাকে এতই আঘাত করেছে যে, আমি বুঝতে পারছি আমাদের মাঝে আর কোনো সুসম্পর্ক নেই। আমাদের আগের বন্ধুত্ব আর কখনোই থাকবে না বলেই আমি মনে করি।

আমি মূলত রাগের মাথায় কিছু কথা বলেছিলাম (এ ধরনের কথা মানুষ ঝগড়াঝাটিতে বলে থাকে)। আর এরপর তিনিও খুবই প্রতিক্রিয়া দেখালেন। সব মিলিয়ে বিষয়টি খুবই বাজে ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। আর এতে আমাদের মাঝে সম্পর্কও নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

আমি আমার বাকি জীবনটা আর মায়ের সঙ্গে থাকতে চাই না। আর তার মতো আবেগপ্রবণ নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখাও বিরক্তিকর। এক্ষেত্রে আমি কী করতে পারি?

–ইতি, হারানো মেয়ে
এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ক্যারোলিন হ্যাক্স। তিনি সম্পর্ক বিষয়ে একজন থেরাপিস্ট।
প্রিয় হারানো মেয়ে,
তোমার মা কখনো কখনো সেরা বন্ধু হয়ে যান। কিন্তু বাস্তবে তিনি আগেও তোমার বন্ধু ছিলেন না, এখনও নেই। মা ও বন্ধু উভয়ে এক মানুষ হওয়া বাস্তবে খুবই বিরল।

তুমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক স্বাধীন মানুষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তোমাকে দেখাশোনা করে রাখা তোমার বাবা-মায়ের দায়িত্ব। আর এক্ষেত্রে তোমার কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে না। বাড়ি ত্যাগ করা তোমার জন্য খুবই কঠিন একটি সিদ্ধান্ত হবে। তাই তোমার উচিত হবে কিছুদিন মায়ের সঙ্গেই থেকে যাওয়া।

তিনি তোমাকে সব ঝড়-ঝাপ্টা থেকে রক্ষা করবেন, এটা যেমন স্বাভাবিক তেমন তিনি তোমাকে বাস্তব জীবনে চলার জন্য উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন, এটাও স্বাভাবিক। আর এ কারণে অনেক সময় মায়েরা অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়েন। আর এ পরিস্থিতিতে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হতেই পারে। এ বিষয়গুলোকে স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিতে হবে।

তুমি জানিয়েছ, তোমার ভুলের কারণে তিনি রেগে গিয়ে এমন কথা বলেছেন যা তোমাকেও আহত করেছে। আর এ বিষয়টি চিন্তা করলে বুঝতে পারবে, উভয়েরই ভুল আছে। এখানে তোমার যেমন তা বলা উচিত হয়নি, তেমন তোমার মায়েরও বলা উচিত হয়নি। কিন্তু এ বিষয়টি সত্য যে, অনেকেই ভুল করে অনেক কাজ করে ফেলে। আর এ বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখাই ভালো।

দুর্ব্যবহার ও রাগারাগি করা মোটেই ভালো নয়। সব সময়েই এগুলো ক্ষতিকর। বিশেষ করে সুস্থ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তবে এ বিষয়ে তোমার মায়ের মনোভাবটাও তোমাকে বুঝতে হবে। এক্ষেত্রে তোমার করণীয় হবে ধৈর্য ধরা। মা যেন কোনো ভুল না বুঝেন সেজন্য চেষ্টা করতে হবে। আর এভাবেই সুস্থ সম্পর্ক আবার জোড়া লাগবে।

–ইতি, ক্যারোলিন হ্যাক্স



মন্তব্য চালু নেই