মালয়েশিয়ার রমজান বাজার : “প্লিজ, আসুন, বিনা পয়সায় ইফতার নিন”

মুসলিম প্রধান মালয়েশিয়ায় যেখানেই যাওয়া যাক না কেন, রমজান মাসের প্রভাব দেখা যাবেই। বিশেষ করে ইফতারের সময় অসংখ্য দোকান দেখা যায়। এসব দোকানে ইফতার সামগ্রী বিক্রি হয়। যেকেউ ইচ্ছামতো খাবার কিনে ইফতার করছেন। তবে দেশটির সমৃদ্ধ সেলানগর রাজ্যে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। সেখানকার অনেক বাজারে এমন লেখা স্টলও দেখা যায় : ‘বিনা মূল্যে খাবার। প্লিজ, আসুন, বিনা পয়সায় ইফতার নিন।’

এ ধরনের স্টলে কেন বিনা মূল্যে ইফতার সামগ্রী বিলি করা হয়। খুব কঠিন নয়। এই যেমন গৃহিনী সুহাইজা সুলায়মানের কথা বলা যাক। তিনি এসব স্টলে আগেই টাকা দিয়ে আসেন। এছাড়া বাড়িতে তৈরি বিভিন্ন খাবারও তিনি সেখানে দিয়ে আসেন। এসব খাবারই গরিব মানুষদের মধ্যে বিলি করা হয়।

তিনি বলেন, ‘তারা যখন বিনা দামে খাবার পায়, তখন আমি হই খুবই খুশি। স্থানীয় খাবারের পাশাপাশি পাশ্চাত্যের খাবারও গরিবদের দেয়া হয়। এটা এজন্য দেয়া হয় যে, গরিবরা সাধারণত পাশ্চাত্যের খাবারের স্বাদ পায় না। তাদের মনেও হয়তো এসব খাবারের স্বাদ পাওয়ার ইচ্ছা জাগে। বছরে অন্তত একবার তারা তাদের ইচ্ছাটি পূরণ করতে পারে।

তিনি জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি এই আইডিয়াটি পেয়েছেন। তারা এ ধরনের স্টলের নাম দিয়েছেন রমজান স্টল।

আগে পয়সা দিয়ে পরে খাবার সরবরাহের ব্যবস্থাটি সাধারণত গরিব এলাকায় চালু করা হয়।

আরেক সমাজকর্মী সৈয়দ আজমি আলবাশি বলেন, কবেল সুহাইজা নন, এ ধরনের আরো অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার অনেকেই নানা দোকানে পয়সা দিয়ে রাখেন, যাতে দোকানিরা অভাবগ্রস্ত দেখলেই তাদের বিনা মূল্যে খাবার দিতে পারেন। দোকানিরাও এতে খুশি হয়।

মালয়েশিয়ার সরকারি হিসাব মতে, দেশটিতে ২০১৪ সালে দারিদ্র অনেক কমে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৬ ভাগ দরিদ্রসীমার নিচে বাস করছেন। দেশটিতে যাদের আয় ২৪৫ ডলারের কম, তাদের গরিব বিবেচনা করা হয়।

অবশ্য, দেশটির অনেক লোকই জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়তে থাকায় বেশ হিমশিম খেয়ে থাকেন। বিশেষ করে যারা নানা স্থানে ছোটাছুটি করেন, এমন লোকদের অনেকের পক্ষে পর্যাপ্ত ইফতার কেনার সামর্থ্য থাকে না। ফ্রি স্টলগুলো তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা হিসেবে দেখা দেয়।

তবে এখন কেবল রমজানে নয়, সারা বছরই এ ধরনের দোকান খোলা রাখার কথা ভাবছেন অনেকে। এতে গরিবরা আরো কিছু সুবিধা পাবে।



মন্তব্য চালু নেই