মারধরের খেসারত হিসেবে জনতার সামনে যুবলীগ নেতাকে জুতাপেটা

মহিপুর থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কিরণ দাসের বিচার শেষ পর্যন্ত জুতাপেটা ও সবার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। ঘটনার তিনদিন পর রোববার বিকেলে মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে বিচারটি শেষ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার শেষরাতের দিকে বাজারের পাহারাদার ওয়ারেছ আকনকে লাঞ্ছিত করেন মহিপুরের ইউপি সদস্য ও মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দাসের ছেলে কিরণ দাস। এর প্রতিবাদে কিরণ দাসের প্রকাশ্য বিচার দাবিতে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিক্ষোভ করে ব্যবসায়ীরা। পরে বেসামাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা তিনদিনের আল্টিমেটাম দেন।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মহিপুরের ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বিকেলে কয়েকশ মানুষ জড়ো হন। সেখানে বিচারক ছিলেন মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. ছালাম আকন এবং মহিপুর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমানসহ ব্যবসায়ী, রাজনীতিক ও প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তারা।

এ সময় বিচারের রায় ঘোষণায় প্রকাশ্যে ২৫ ঘা বেত্রাঘাত ও উপস্থিত সবার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাওয়ার কথা বললে কিরণের অনুসারীরা হট্টগোল শুরু করেন। ওসি মিজানুর রহমান এ সময় জনরোষ থামাতে রায়ে পরিবর্তন এনে অপরাধী কিরন দাসকে দিয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাওয়ান এবং তার বাবা নিমাই চন্দ্র দাসকে দিয়ে জুতাপেটার মধ্য দিয়ে বিচার কাজ সমাপ্ত করেন।

মহিপুর বন্দরের নাইটগার্ড বয়ঃবৃদ্ধ ওয়ারেছ আকন ও নুর হোসেনকে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে লাঞ্ছিত করেন যুবলীগ নেতা কিরণ দাস। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ দফায় দফায় বিক্ষোভ করে বিচারের জন্য সময় বেঁধে দেয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কিরণ দাস জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের মহিপুর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মহিপুরকে থানায় উন্নীতের পরে যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে ঢোকেন তিনি।

এদিকে বিচার সম্পন্ন করার কথা স্বীকার করে মহিপুর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানসহ সতর্কতার সাথে বিচার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই বিচারে বিক্ষুব্ধরা সন্তুষ্ট হয়েছেন। এখন আর কোনো ঝামেলা নেই।



মন্তব্য চালু নেই