‘মানুষ মেরে খেয়ে ফেলছেন!’ নৃশংস শাস্তি বৃদ্ধার
শেষ পর্যন্ত গ্রামের লোকেরাই অসুস্থ্য অবস্থায় ভর্তি করেন স্থানীয় দ্বারিগেড়িয়া হাসপাতালে৷ বর্তমানে ওই বৃদ্ধা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷
ডাইনি অভিযোগে ফের মহিলাকে মারধর৷ প্রাণে মারার চেষ্টায় গায়ে ঢালা হল কেরোসিনও৷ তবে কিছু প্রতিবেশীর চেষ্টায় কোনওক্রমে রক্ষা পেলেন ৭০ বছর বয়সি এক আদিবাসী বৃদ্ধা। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আপাতত হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর।
ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডের ফুলটুসা এলাকায়৷ এই গ্রামে অধিকাংশই আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করেন৷ গত একমাসে এই আদিবাসী গ্রামে বেশ কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা জ্বর বা বিভিন্ন পেটের সমস্যায় অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন৷ আদিবাসীরা এই ধরনের মৃত্যুর কারণ জানতে জানগুরুর পরামর্শ নিতে গিয়েছিলেন৷ সেই জানগুরুর নিদানে গ্রামের বাসিন্দা অসুস্থ ওই বৃদ্ধাকে ডাইনি বলে আখ্যা দেওয়া হয়। বৃদ্ধার নাম পুতুল সোরেন৷ একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় বাড়িতে একাই থাকতেন ওই বৃদ্ধা৷ কোনওমতে দিন চলছিল রুগ্ন ওই বৃদ্ধার৷ বুধবার রাতে তাঁকে ডাইনি প্রতিপন্ন করে গ্রামের কিছু লোকজন ধরে আনে৷ গ্রামের মধ্যেই এক জায়গায় বসিয়ে রেখে বৃদ্ধাকে মারধর করা হয়৷ বেধড়ক লাঠি পেটা করে গায়ে ঢেলে দেওয়া হয় কেরোসিন৷ গ্রামের লোকজনকে মেরে খেয়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে৷ তাঁকে পোড়াতে উদ্যত হলে পুলিশি ঝামেলার ভয়ে গ্রামেরই কিছু লোকজন তাতে বাধা দেয়। শেষ পর্যন্ত গ্রামের লোকেরাই অসুস্থ্ অবস্থায় ভর্তি করে স্থানীয় দ্বারিগেড়িয়া হাসপাতালে৷ বর্তমানে ওই বৃদ্ধা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷
বৃদ্ধার মেয়ে লক্ষী হেমব্রমের অভিযোগ, “মাকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে রাতে প্রচণ্ড মেরেছে পাড়ার লোকজন৷ এখন মা এত অসুস্থ যে খেতে পর্যন্ত পারছে না৷ তবে পাড়ার লোকেরাই পুলিশে জানাতে নিষেধ করেছে বলে জানাইনি৷” এ বিষয়ে পুলিশ অথবা বিডিও কেউই কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন।-এবেলা
মন্তব্য চালু নেই