মানুষের মৃত্যুর পর শোক পালনের বিধান

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন, (দুনিয়ার) প্রতিটি মানুষকেই মৃতু্যর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। মানুষের আত্মীয় স্বজন মারা গেলে কান্নাকাটি-আহাজারি তথা হাউ-মাউ করে বিলাপ শুরু করে দেয়। অথচ ইসলামে হাউমাউ করে কান্নাকাটি করা নিষিদ্ধ। তবে হাদিসে পাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনদিন পর্যন্ত শোক পালন করা যাবে বলে ঘোষণা করেছেন।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর পর হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে চুমু দিয়েছিলেন এবং তিন দিন কেঁদেছিলেন। যা হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন-

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ঘোড়ায় চড়ে তাঁর বাড়ি থেকে এসে অবতরণ করলেন। অতপর মসজিদে প্রবেশ করলেন। ওই সময় ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন।

আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু কারো সঙ্গে কথা না বলে হজরত আয়েশার ঘরে প্রবেশ করলেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তায়াম্মুম করাচ্ছেন এ অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিবারা তথা চাদর দ্বারা আবৃত ছিলেন।

আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেহারা (আবৃত অবস্থা থেকে উন্মুক্ত) খুললেন এবং ঝুঁকে পড়ে তাঁর দু`চোখের মাঝখানে চুমু দিলেন এবং কাঁদলেন, অতঃপর বললেন, হে আল্লাহর নবি! আপনার জন্য আমার বাবা-মা কোরবান হোক। আল্লাহ আপনার জন্য দু`বার মৃত্যুকে একত্রিত করবেন না। আপনার যে মৃত্যু হলো এটা হয়েই থাকে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জাফর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত জাফরের পরিবারকে তিন দিনের অবকাশ দিয়েছিলেন যে, তিনি তাদের নিকট আসবেন। অতপর তাদের নিকট আসলেন এবং বললেন আজকের দিন পর তোমরা আমার ভাইয়ের প্রতি আর কেঁদো না।

সুতরাং প্রতিটি মানুষের জন্য মৃত্যুর পর তিনদিন শোক পালন করা যাবে। মৃতব্যক্তির চেহারা উম্মুক্ত করা এবং দু’চোখের মাঝখানে (কপালে) চুমু দেয়া যাবে। তা ইসলামে বৈধ। হাউমাউ করে কান্না কাটি করা বৈধ নয়। তা করা যাবে না। এ কান্নায় চোখের পানি পড়বে কিন্তু শব্দ হবে না। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত হাদিসের আলোকে আমল যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।



মন্তব্য চালু নেই