মানুষখেকো ছিল আমাদের আদিপুরুষ নিয়ানডারথাল!

মানুষের আদিপুরুষ নিয়ানডারথালদের নিয়ে আমাদের আগ্রহের শেষ নেই। বলা হয়, নিয়ানডারথাল আর প্রাগৈতিহাসিক আমলের মানবজাতির সদস্যরা প্রায় সময় স্বজাতি ভক্ষণ করত। কিন্তু সেই মানুষগুলো যে মানুষখেকো ছিল, তা প্রমাণ করা বিজ্ঞানের জন্য বেশ কঠিন বিষয়। তবে সাধারণভাবে এর কারণ হিসাবে ক্ষুধা, খাবারের অভাব এর দুই দলের প্রচণ্ড দ্বন্দ্বকে কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়, নিয়ানডারথালরা একে অপরকে কেবল খাবার বানানোর জন্যেই হত্যা করত না।

ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ব্রাইটনের জেমস কোল বলেন, আসলে তখন তারা বেশ কিছু প্রাণীর সঙ্গে নিজেদের তুলনা করে হতাশাজনক চিত্র দেখতো। যেমন- একটি ম্যামোথের পাশে এক ডজন মিলেও অতি ক্ষুদ্রই দেখত তারা। আসলে ক্যালরির পরিমাণ বিচারে আমরা খুব শক্তিশালী নই।

কোল এর আগে নিয়ানডারথালদের খুঁজে পাওয়া ৯টি ফসিলসংক্রান্ত গবেষণাপত্র তুলে ধরেন। ওই সব ফসিলে আদিপুরুষদের মানুষখেকো স্বভাবের প্রমাণ মেলে। ওই ফসিলগুলো ১৪ হাজার থেকে ৯ লাখ বছর আগেকার। পেলোলিথিক যুগের চিত্র উঠে এসেছে এসব ফসিলে। এসব ফসিলের মধ্যে ৫টি নিয়ানডারথালের বিবর্তিত পরবর্তী প্রজন্ম।

কোলের প্রশ্ন হলো, ওই সাইটে যেসব দেহ মিলেছে তাদের কী পরিমাণ ক্যালরি ছিল? এর জন্য অন্যান্য তথ্যের সহায়তা নিয়েছেন তিনি। আধুনিক যুগের গড়পড়তা আকারের একটা মানুষ দেহে ১ লাখ ৪৪ হাজার ক্যালরি থাকতে পারে। পরে তিনি ওই ফসিলগুলোর বয়স বিবেচনা করেন। সেই সময় একজন শিকারী একটা ম্যামথ বা গণ্ডার বা ভালুক থেকে যত ক্যালরি পেত, তার চেয়ে বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। এগুলো শিকার করা সোজা কথা নয়। তাই নিজের জাতি শিকার করাতে সমস্যা কোথায়?

হয়তো সেই সময় সামান্য খাবারের জন্য মানুষকে অনেক সংগ্রাম করতে হতো। সে ক্ষেত্রে অন্য একটা মানুষকে হত্যা করা অনেক সহজ খাবারের সন্ধান দেয়। এ ছাড়া স্বজাতিকে খাওয়ার পেছনে বেশ কিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ও প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। এ ছাড়া দলগত যুদ্ধ ও হিংস্রতার কারণেও এ সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।

তবে এ তথ্য নিশ্চিত করতে হলে আরো অনেক পথ যেতে হবে বলেই মনে করেন কাটালান ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান প্যালিওকোলজি অ্যান্ড সোশাল এভোলেশন এর বিশেষজ্ঞ পালমিরা সালাদি।
সূত্র : ইয়াহু নিউজ



মন্তব্য চালু নেই