মাত্র পাঁচ মিনিটেই ডিভোর্স!
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বসবাসকারী খাসী সম্প্রদায় মূলত মেঘালয়ের বাসিন্দা। ধর্মগত পরিচয়ে তারা মূলত সনাতন আদিবাসী ধর্মমতের অনুসারী। অনেকেই ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিস্টান কিংবা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
এদের সমাজ মাতৃতান্ত্রিক। বিয়ের পরে তাই মহিলাদের পদবী পরিবর্তনের রীতি তাদের মধ্যে প্রচলিত নেই। এ সম্প্রদায়ের সন্তানরাও তাদের নামের পরে মায়ের পদবীটি ব্যবহার করেন, বাবার নয়।
উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তিতে পুত্রসন্তানের তুলনায় কন্যাসন্তানের অধিকার এখানে বেশি। কোনও সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে ছোট মেয়েই যাবতীয় সম্পত্তির অধিকারী হন।
সবচেয়ে বৈপ্লবিক ঠেকবে খাসীদের বিবাহবিচ্ছেদ রীতি। পরিবারের মধ্যস্থতায় বিয়ে অর্থাৎ অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ খাসীদের মধ্যে প্রচলিত নেই বললেই চলে। ছেলে-মেয়েরা নিজেরাই নিজেদের জীবনসঙ্গী বা সঙ্গিনীকে বেছে নেন। এর পর যদি কোনও কারণে দাম্পত্য-সম্পর্কে কোনও রকম তিক্ততা দেখা দেয়, এবং স্ত্রী যদি সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি বিবাহবিচ্ছেদের পথে এগোবেন, তাহলে তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গৃহীত হয়।
বিচ্ছেদের পরে সন্তান ও সম্পত্তির অধিকারও স্ত্রীর ওপরেই বর্তায়। খাসীদের মধ্যে প্রচলিত বিবাহবিচ্ছেদের সনাতন রীতিটিও ভারি মজার। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে স্বামী নিজের স্ত্রীর হাতে গুঁজে দেন পাঁচটি পয়সা। এটি হাতে নিয়ে তার সঙ্গে আরও পাঁচ পয়সা যোগ করে মোট দশ পয়সা স্ত্রী তুলে দেন গ্রামপ্রধানের হাতে। গ্রামপ্রধান এবার সেই দশ পয়সা নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেন দূরে। ব্যস, বিচ্ছেদ সম্পূর্ণ!
আধুনিক খাসী তরুণ-তরুণীরা অবশ্য অনেকেই এই সনাতন রীতি মেনে চলেন না। তারা বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিত সমস্যা আদালতেই মিটিয়ে নেওয়ার পক্ষপাতী। কিন্তু সনাতন খাসী সমাজ যে ব্যতিক্রমী স্বাধীনতা দিয়েছে নারীকে, সেই ধারাই তারা বজায় রাখার চেষ্টা করেন।
মন্তব্য চালু নেই