মাঠে নেমেছে ছাত্রদল-শিবিরের ‘গোয়েন্দা বাহিনী’
হরতাল-অবরোধে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে নাশকতা চালানোর জন্য রাস্তায় নিজস্ব গোয়েন্দা বাহিনী নামিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির। নাশকতায় তারা তিন স্তরের বাহিনীকে কাজে লাগাচ্ছে। প্রথম বাহিনীর কাজ পরিকল্পনা করা, পরের বাহিনীর কাজ গোয়েন্দাগিরি করা এবং শেষ বাহিনীর কাজ ‘অপারেশন’ চালানো।
সম্প্রতি সিলেট নগরীতে পুলিশের নজরদারি ও তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নগরীর কোথায় কোথায় নাশকতা চালানো হবে তা আগে থেকেই ঠিক করেন ছাত্রদল ও শিবিরের দায়িত্বশীল নেতারা। এরপর ওই এলাকায় আগে থেকেই অবস্থান নেয় শিবিরের ‘গোয়েন্দা বাহিনীর’ সদস্যরা। আশপাশে পুলিশের অবস্থান না থাকলে তথ্য পৌঁছে দেয়া হয় ‘অপারেশন’ টিমের কাছে। ‘গোয়েন্দা তথ্য’ পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মোটরসাইকেলে করে এসে নাশকতা চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এছাড়াও পুলিশের গতিবিধি ও অবস্থান জানতে নগরীতে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়ায় শিবিরের ‘গোয়েন্দা বাহিনীর’ সদস্যরা।
গত বুধবার সিলেট নগরীর সোবহানীঘাটস্থ বেঙ্গল গ্যাসোলিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ডিউটি পরিবর্তনের ফাঁকে ককটেল হামলা চালায় কয়েকজন যুবক। পুলিশের ধারণা ছাত্রদল ও শিবিরের ‘গোয়েন্দা সদস্যদের’ দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধে প্রতিদিনই সিলেটের রাজপথে ঝটিকা মিছিল বের করছে ছাত্রদল ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বের করা মিছিল থেকে তারা প্রতিদিনই গাড়ি ভাঙচুর ও পেট্রোলবোমা হামলা চালাচ্ছে। তাদের কৌশলের কাছে পেরে ওঠতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এ অবস্থায় ছাত্রদল ও শিবিরের ভেতর সোর্স ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ। সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়কারী ও নাশকতার মূল পরিকল্পনাকারী শামসুর রহমান জাবালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জাবালকে রিমান্ডে নিয়ে শিবিরের নাশকতার কৌশল ও পরিকল্পনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বের করেছে বলে দাবি করছে পুলিশ।
গত সোমবার দক্ষিণ সুরমার একটি সিএনজি স্টেশনে পেট্রোল বোমা হামলার সময় হাতেনাতে জনতার হাতে আটক হয় মহানগর শিবিরের নেতা আবদুল আজিজ। তার কাছ থেকেও নাশকতার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করে পুলিশ।
এছাড়া ছাত্রদলের লিটনসহ বেশ কয়েকজন নাশকতাকারীকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। এসব নেতাকর্মী গ্রেপ্তারের পর ছাত্রদল ও শিবির নেতাকর্মীরা পুনরায় কৌশল পরিবর্তন করে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে নাশকতা চালানোর জন্য রাস্তায় নামায় নিজস্ব ‘গোয়েন্দা বাহিনী।’
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘পুলিশের কৌশল ও তৎপরতার কারণে ছাত্রদল ও শিবিরের নাশকতার মূল পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়েছে। এখন তারা নিজস্ব গোয়েন্দা বাহিনী রাস্তায় নামিয়ে ঝটিকা নাশকতার চেষ্টা করছে। ছাত্রদল ও শিবিরের গোয়েন্দারা মোবাইল ফোনে খুদে বার্তায় তথ্য দিলেই তারা আচমকা এসে নাশকতা পরিচালনা করে তাদের অপারেশন টিম।’
তবে পুলিশ এই ‘ঝটিকা নাশকতা’ প্রতিরোধে এখন যথেষ্ট সর্তক রয়েছে বলেও জানান রহমত উল্লাহ।
মন্তব্য চালু নেই