মাটির নিচে ১৭ বছর পর্যন্ত থাকে এমন বিস্ময়কর পোকার সন্ধান

বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাগিসিকাডা। উত্তরপূর্ব আমেরিকার এই পোকাটি সাধারণত পিরিওডিকেল সিকাডা নামে পরিচিত। মাটির নিচে ১৩ কিংবা ১৭ বছর কাটিয়ে দেয় এরা। তারপর বাইরে বেরিয়ে আসে গান গাওয়া এবং যৌন উত্তেজনার তাগিদে। এই পোকাটির সময়জ্ঞান সত্যি অদ্ভুত।

কিভাবে জীবনযাপন করতে হয় তা ভালোভাবেই জানে সিকাডা। তাদের সমস্বরে গান গাওয়ার শব্দ জেট প্লেনের ইঞ্জিন অথবা রক কনসার্টের উচ্চ শব্দের মতো।

মৃত্যুর আগে প্রতিটি পোকাই সঙ্গীর খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। তাদের এই আয়োজনকে একটা বিশাল পার্টির মতো বললেন যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কা-লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ের জোনাথন লারসন।

কতটা গোপনীয়তার সঙ্গে তারা থাকে এই উচ্ছ্বসিত দল দেখে সে সম্পর্কে ধারণা পায় মানুষ। জীবনের বড় একটা অংশই তারা মাটির নিচে লুকিয়ে পার করে। খাওয়া থেকে বেড়ে ওঠা সব কিছুই ঘটে গোপনে। কিছু পোকা ১৩ বছর এবং বাকিরা ১৭ বছর আত্মগোপনে থাকে।

সিকাডা পৃথিবীর দীর্ঘজীবী পোকাদের মধ্যে অন্যতম। তাদের বিস্ময়কর জীবনপ্রণালী বুঝতে দশকের পর দশক চলে গেছে মানুষের। এমনকি এখনো আমরা তাদের সম্পর্কে সব জানি না। কেবল এটুকু জানি, গণিতশাস্ত্র অনুযায়ী জীবনযাপন করে এরা।

১৭ বছর বয়সী সিকাডাদের যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরে এবং ১৩ বছর বয়সী সিকাডাদের যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণে পাওয়া যায়। সিকাডারা ১৫টি জাতিতে বিভক্ত, সবাই ভিন্ন ভিন্ন জীবনচক্র মেনে চলে।

প্রতিটি জাতিকে রোমান সংখ্যা দ্বারা নির্দেশ করা হয়। কিন্তু এই সংখ্যায়নটি বিভ্রান্তিকর। কারণ, ১৮৯৮ সালে পতঙ্গবিজ্ঞানী চার্লেস মার্লাট অনুমান করেছিলেন তাদের ৩০টি জাতি আছে। ক্রমানুসারে মার্লাট তাদের নামকরণও করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে ১৭ টি জাতি আবিষ্কৃত হয়েছে এবং নামকরণ অপরিবর্তিত থেকে গেছে। এরমধ্যে দুটি জাতি বিংশ শতাব্দির মধ্যেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। টিকে আছে অবশিষ্ট ১৫টি জাতি।



মন্তব্য চালু নেই