‘মাঝে মাঝে ভাবি আমি কি টলিউডের ইমরান হাশমি হয়ে যাচ্ছি?’
সাদা হাইহিল। কানে বড় ঝোলা দুলের তন্বী এসেই বললেন, ‘‘সরি, অনেকক্ষণ বসিয়ে রেখেছি। আর দেরি করাব না। একটু পানি খেয়ে নিই’’— ইনি নুসরত ফারিয়া। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে এ দেশে তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘হিরো ৪২০’। ছবির আড্ডা তো বটেই, পাশাপাশি শেয়ার করলেন তাঁর জীবনের অজানা কথা।
স্কলারশিপ পাওয়া ভাল ছাত্রী থেকে বড় পর্দার লাভার গার্ল। চেঞ্জটা কেমন এনজয় করছেন?
দারুণ। আমি বরাবর ভাল ছাত্রী ছিলাম। ক্লাস এইট থেকেই স্কলারশিপ পেতাম। আর অভিনয় শুরুর পর থেকে লাভার গার্ল ইমেজটা তৈরি হয়েছে। বিশ্বাস করুন আমি এটাই মেনটেন করতে চাই।
কলকাতায় নাকি অনেকে বিশ্বাসই করছেন না আপনি বাংলাদেশের?
(চোখ বড় করে )ঠিক বলেছেন। আমকে এখানে সকলে ঘরের মেয়ে বলেই মনে করেন। অনেকে বিশ্বাসই করে না আমি বাংলাদেশের। এই তো সেদিন শো-তে একজন আমাকে বললেন, ‘তুমি তো আমাগো মাইয়া’।
অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন ছিল?
না। নাচতে ভালবাসতাম। সালসা, কনটেম্পরারি শিখেছি। মিলিটারে পরিবারে বড় হয়েছি তো। সেখানে হাউজ পার্টি লেগেই থাকত। পারফর্ম করতাম। তবে অভিনেত্রী হব ভাবিনি।
কী ভাবে মিডিয়ায় এলেন?
স্কুল থেকেই ডিবেট করতাম। সে ভাবেই মিডিয়ায় আসি। সে সময় ৮০০ টাকা পেতাম প্রতি শোতে। জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতাতেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ক্লাসে স্পেশাল আদর পেতাম।
আপনার প্রথম ব্রেক?
টুয়েলভথ গ্রেড কমপ্লিট করার পর ছোটদের অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতাম। তার পর বাংলাদেশের ‘রেডিও ফুর্তি’তে নাইট শোয়ের অফার পাই। যেটা পরে ভাইরাল হয়ে যায়। আসলে টিনএজাররা প্রথম থেকেই আমাকে খুব পছন্দ করে।
অভিনয়ের ব্যাপারে আপনার পরিবার আপনার পাশে দাঁড়িয়েছিল?
না। একা একা কাঁধে ভারি ব্যাগ নিয়ে অটোতে করে যেতাম। কিন্তু পরে তাঁরাই দেখেছেন যা করছি সেটা ভালই। বিশেষ করে আম্মু খুব সাপোর্ট করেছে। যেখানে ট্রাভেল করতাম আম্মু সঙ্গে যেত।
হিরো ৪২০-এ আপনার চরিত্রটি কেমন?
আমার চরিত্রের নাম রাই। একেবারে পাশের বাড়ির মেয়ে। একটু বোকা। সেজন্যই হিরো ৪২০-এর প্রেমে পড়ে যায়। (প্রাণখোলা হাসি)
আপনি তো বলিউডেও কেরিয়ার শুরু করছেন।
হুম। ‘গাওয়া দ্য উইটনেস’-এ ইমরান হাসমির সঙ্গে অভিনয় করছি।
কী ভাবে অফার পেলেন?
আশিকির গান দেখেই গাওয়ার কাস্টিং ডিরেক্টর প্রথম ফোন করেন আমাকে। তারপর প্রোডিউসর যোগাযোগ করেছিলেন। আমার চরিত্রটা এখানে বেশ চ্যালেঞ্জিং।
পছন্দের অভিনেতা?
হৃতিক রোশন। আমার চাইল্ডহুড ক্রাশ। ওর জন্য আমি সব করতে পারি।
ইমরানের পরেই যদি হৃতিকের সঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পান?
(এ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। শুধুই এক্সপ্রেশন।)
আর টলিউডে?
অঙ্কুশ। আই লভ হিম। ও আমেজিং। আমার প্রথম ছবি আশিকি ওর সঙ্গে। আমাকে খুব হেল্প করেছে। ও না থাকলে আমি ভাল পারফরম্যান্স দিতেই পারতাম না।
ঢলিউডে আপনার কোনও বন্ধু আছে?
অফকোর্স। শুভ। ও তো কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশের শাহরুখ খান হয়ে যাবে।
আপনাকে তো টলিগঞ্জের ইমরান হাশমিও বলছেন অনেকে।
সত্যি। আর বলবেন না! (অবাক হয়ে)প্রত্যেক ছবিতে চুমুর দৃশ্য রাখছেন পরিচালকরা। আমি নিজেও মাঝে মাঝে ভাবি আমি কি টলিউডের ইমরান হয়ে যাচ্ছি?
বাংলা ছবির ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
দেখুন, এপার বাংলা এপার বাংলার মধ্যে কমন বাংলা। রান্না মানে খাওয়াদাওয়া আর সিনেমা দুই বাংলার সেতু। দিনের শেষে আমরা চাই মানুষ হলে গিয়ে সিনেমা দেখুক। তাই এই উদ্যোগ তো খুব পজেটিভ।
অনেকেই জানতে চান নুসরতের জীবনের বিশেষ মানুষ কে?
(মুখের দু’পাশে হাত দিয়ে চুপিচুপি) বলা যাবে না। তবে ভালবাসাই আমার শক্তি। কিন্তু আরও একজন আমার সোর্স অফ এনার্জি।
কে তিনি?
রনি। আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। আমার সব কষ্ট ও জানে। আমি কাঁদতে কাঁদতে ওকে ফোন করলে হাসিমুখে ফোন রাখি।
তাহলে বিয়েও তো…?
(মুচকি হেসে) ওয়েল ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করব। তবে কাকে এখন বলব না।
মন্তব্য চালু নেই