মহাশূন্যে গুলি করলে কী হবে?
পৃথিবীতে যুদ্ধ-বিগ্রহ, খুনোখুনি লেগেই আছে। পরিস্থিতি যদি আরো খারাপ হয় বা মানুষকে যদি সত্যি সত্যি স্টার ওয়ার্সের মতো যুদ্ধক্ষেত্র দেখতে হয়, তবে মহাশূন্যে গোলাগুলিও মানুষকে দেখতে হবে। কিন্তু মহাশূন্যে বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দিলে ঠিক কী হবে?
পৃথিবীতে গুলি করা আর মহাশূন্যে গুলি করার পর প্রথম যে পার্থক্যটি পরিলক্ষিত হবে তা হলো শব্দে। পৃথিবীতে গুলি করলে তা বেশ জোরালো একটা শব্দ তৈরি করে। তবে মহাশূন্যে গুলির কোনো শব্দ পাওয়া যাবে না।
কিন্তু এখানেই সব শেষ না। মহাশূন্যে যিনি বন্দুকের ট্রিগারে চাপে দেবেন, তাকে অদ্ভুত এক পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে।
নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী, বন্দুক তাক করে গুলি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গে, বন্দুক থেকে গুলি বের হওয়ার বিপরীতি প্রতিক্রিয়ায়, যিনি গুলি ছুড়েছেন তিনি ঠিক উল্টো দিকে ছিটকে যাবেন। এখন প্রশ্ন করা যেতে পারে, এই ছিটকে যাওয়ার গতি কতটা হতে পারে?
এ প্রশ্নের জবাব দিতে একটি একে-৪৭ এর সঙ্গে একটি স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন পিস্তলের তুলনা করা যেতে পারে। একে-৪৭ থেকে বের হওয়া গুলির গতি থাকে ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার ৬শ মাইল। তাই মহাশূন্যে একে-৪৭ থেকে গুলি ছোড়ার পর, যিনি গুলি ছুড়বেন তাকে ঘণ্টায় প্রায় শূন্য দশমিক ০৬৮ মাইল গতিবেগে উল্টো দিকে ছিটকে যেতে হবে।
অন্যদিকে পয়েন্ট ফাইভ জিরো ক্যালিবার পিস্তল থেকে বের হওয়া বন্দুকের গুলির গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার ৩৩০ মাইল। অর্থাৎ, এর গুলির গতিবেগ একে-৪৭ এর গুলির বেগের চেয়ে কম। কিন্তু স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসনের বুলেটের ওজন একে-৪৭ এর বুলেটের ওজনের প্রায় দ্বিগুণ।
এর ফলে স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন পিস্তল থেকে গুলি ছুড়লে, একে-৪৭ থেকে গুলি ছোড়ার দ্বিগুণ গতিতে উল্টো দিকে ছিটকে যেতে হবে। সেই গতি হবে- ঘণ্টায় দশমিক ১৩৬ মাইল; যা আধাঘণ্টায় একটি ফুটবল স্টেডিয়াম প্রদক্ষিণের জন্য যথেষ্ট।
তবে যে অস্ত্রই ব্যবহার করা হোক না কেন, মহাশূন্যে নিশানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার প্রয়োজন। কারণ, শেষ পর্যন্ত সামনের দিকে ছোড়া গুলি উল্টো পথে ঘুরে নিজের পিঠেই বিদ্ধ হতে পারে। মহাশূন্যে যেহেতু কোনো প্রতিরোধক নেই, তাই কোনো একটা গ্রহের কক্ষপথ ঘুরে যিনি গুলি ছুড়েছেন তার পিঠেই গুলিটি বিদ্ধ হতে খুব বেশি সময় প্রয়োজন হবে না।
বিজনেস ইনসাইডার অবলম্বনে।
মন্তব্য চালু নেই