মরুর দেশে রয়েল বেঙ্গল টাইগার
মরুভূমির দেশ সৌদি আরব। বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার বলেও পরিচিত এ দেশ। অন্যান্য দেশের শ্রমিকের পাশাপাশি এ দেশে রয়েছে প্রায় ১৫ লাখের মতো বাংলাদেশি। ব্যস্ততার মাঝেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেখা মিলে অনেক দর্শনীয় জায়গায়। তেমনি এক জায়গা রিয়াদ চিড়িয়াখানা। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের বুকে ৫৫ একর জায়গার উপর গড়ে তোলা হয়েছে রিয়াদ চিড়িয়াখানা। যাকে আরবিতে বলা হয় হাদিকাতুল হাইওয়ানাত।
আর এই চিড়িয়াখানায় অন্যান্য দেশের দর্শনার্থীর পাশাপাশি বাংলাদেশি দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে খুব বেশি। তেমনি কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বাংলাদেশের সুন্দরবনের সুদর্শন রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে এই চিড়িয়াখানায়। মূলত সেই বাঘ দেখতেই সেখানে যান তারা। দর্শনার্থীরাই বলছেন, এ চিড়িয়াখানার সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
মাত্র ২/৩ মিটার দূর থেকে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে বাঘ, ভাল্লুক, সিংহ, হরিণ, জিরাপ, হাতি, বানর, উটপাখি, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ, বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস, কুমির, পেঙ্গুইন, উট, সজারু, জেব্রা, হনুমান, মেষ, টিয়াসহ দেড় হাজারের বেশি জীবজন্তু। চিড়িয়াখানাতে রয়েছে ১৫শ’র বেশি পশু-পাখি এবং ৪০ প্রজাতির জীব-জন্তু।
চিড়িয়াখার ভিতরে রয়েছে দর্শনার্থীর জন্য বেশ কয়েকটি কফি শপ, রেস্টুরেন্ট, পুরুষ এবং নারীদের জন্য আলাদা বিশ্রামাগার, টয়লেট, সুবিশাল কার পার্কিং ব্যবস্থা এবং বাচ্চাদের জন্য রয়েছে খেলার মাঠ।
১৯৫৭ সালে রিয়াদের মালাজ এলাকায় নির্মিত চিড়িয়াখানাটিতে দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছেন ৭০ জনের মতো বাংলাদেশি।
চিড়িয়াখানায় প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ১০ রিয়াল, শিশুদের জন্য ৫ রিয়াল এবং ছাত্রদের জন্য ২ রিয়াল। হাঁটতে না পারা দর্শনার্থীরা ২ রিয়ালে ট্রেনে চেপে পুরো চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখা যাবে মাত্র ২০ মিনিটে।
শনিবার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হয় দুপুর পর্যন্ত। এছাড়া সপ্তাহের অন্য সময় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা এবং দুপুর ১টা থেকে মাগরিবের আজান পর্যন্ত খোলা থাকে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার জুমার পর থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ফ্যামিলি, রোব ও মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছেলে শিক্ষার্থী, সোম ও বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মেয়ে শিক্ষার্থী, সোম ও বুধবার দুপুর ১টা থেকে মাগরিব পর্যন্ত ব্যাচেলর পুরুষদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
চিড়িয়াখানাতে সবুজ ঘাস রয়েছে ৪১ হাজার ৯৭০ মিটার এলাকা জুড়ে, মাঠ আছে ৩০৮ বর্গ মিটার, ২ হাজার ৫৩৩ প্রজাতির ফুল, ১ হাজার ৩৫৯টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, এবং ছোটখাটো ঝোপঝাপ রয়েছে ১১০০টি।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পরিবার অথবা উল্লেখিত দিনে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই হাদিকাতুল হাইওয়ানাত বা চিড়িয়াখানায়। পশু-পাখি আর জীব-জন্তু দেখার পাশপাশি পাবেন সবুজের সঙ্গে মিলিয়ে যাওয়ার এক অপূর্ব সুযোগ।
চিড়িয়াখানাটি ভাড়া দেয়া হয় বিভিন্ন পার্টির পিকনিক করার জন্যও, সেক্ষেত্রে আগে থেকেই শর্তসাপেক্ষে অনুমতি নিতে হয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
মন্তব্য চালু নেই