ভোলায় চিংড়ি রেণু সংগ্রহের নামে অন্য মাছে পোনা নিধন
মোঃ ফজলে আলম, ভোলা॥ ভোলার মেঘনায় প্রতিনিয়ত বাগদা ও গলদা চিংড়ি রেণু সংগ্রহের নামে অবাধে নিধন হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার মাছের পোনা। এতে অন্যান্য প্রজাতির মাছসহ জলজ প্রাণীর ক্ষতির প্রভাব প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ ও মাঝারি বয়সের ছেলে- মেয়েরা মশারি ও ঠেলা জাল দিয়ে মেঘনায় অবাধে বাগদা-গলদা রেণু ধরছে। আর এই রেণু ধরতে ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা। গত দুইদিন ভোলার মেঘনার, ইলিশা,রাজাপুর,তুলাতলি, দৌলতখাঁন ও হাকিমুদ্দিনসহ মেঘনার বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র।’
স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সামনে এই রেণু আহরণ করলেও তারা এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, একটি বাগদা ও গলদা চিংড়ি রেনু আহরণ করার সময় ৯ থেকে ১২০০ প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস হয়। এর মধ্যে প্রায় ২ হাজার প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
চিংড়ি পোনা আহরণের নামে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজপ্রাণী। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ইলিশশূন্য হয়ে পড়বে মেঘনা নদী সহ বিভিন্ন গুলোতে।
মেঘনার বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, সিজনাল জেলেরা মশারি ও ঠেলা জাল দিয়ে বাগদা ও গলদা রেণু আহরণ করছে। শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ ও মাঝারি বয়সের ছেলেমেয়েরা দলবেঁধে রেণু সংগ্রহ করছে। প্রতিটি দলে ১৫-২০ জন রয়েছে। এদের অনেকের কোমড় ও হাতে রয়েছে বালতি ও হাড়ি। মেঘনায় কয়েকবার জাল টানার পর ডাঙ্গায় উঠে আসে। পরে জালের কোণায় জমানো বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা, জলজপ্রাণী ও চিংড়ির পোনা বড় থালা বা বাসনে রাখা হয়। পরে বেছে বেছে আলদা করা হয় বাগদা-গলদার পোনা। বাগদা-গলদার পোনা আলাদা করা শেষ হলে অবশিষ্ট মাছের পোনা, জলজপ্রাণীসহ বিভিন্ন প্রজাতির পোনা শুকনো মাটিতে ফেলে দেয়া হয়। এভাবে মেঘনায় প্রতিনিয়ত বাগদা-গলদা চিংড়ি পোনা আহরণের নামে অবাধে নিধন হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনাসহ জলজপ্রাণী।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পলাশ হালদার বলেন, ‘মেঘনায় অভিযানের পাশাপাশি গণসচেতনতার কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে অভিযান সামান্য ব্যাহত হলেও শেষ পর্যন্ত অভিযান চলবে।’
মন্তব্য চালু নেই