ভোলার লালমোহনে একের পর এক খাল দখলের প্রতিযোগিতা মেতে উঠেছে ভূমিদস্যুরা, অসহায় কর্তৃপক্ষ
ভোলার লালমোহনে সরকারি দলের নেতারা খাল দখলের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। একের পর এক খাল দখল করে স্থাপনা নির্মান করলেও কর্তৃপক্ষ নিরব। খালগুলো কোনো দপ্তরের আওতায় তার মালিকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যার সুযোগ নিয়ে দখলবাজরা খাল দখল উৎসবে নেমেছে। লালমোহনের ইউএনও বলছে জেলা পরিষদের খাল। যার কারণে তিনি কিছুই করতে পারছে না। তবে খালগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় বলে জানা গেলেও দখলবাজদের ক্ষমতার প্রভাবে তারা কোনো ভূসিকা নিচ্ছে না। লালমোহন পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকায় খাল দখলের বড় স্থান। এখানে বেশিরভাগ খালই বেহাত হয়ে যাচ্ছে। গজারিয়া বাজারের পূর্ব পাশে প্রধান সড়কের রাতারাতি ঘর তুলে খাল দখল করা হয়েছে।
গত ১সপ্তাহ ধরে ওই খাল দখলের উৎসব শুরু করেছে সরকারি দলের কতিপয় নেতারা। এদের মধ্যে পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড আ.লীগর সম্পাদক হাসানাইন পঞ্চায়েত, ইউনিয়ন আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ বাবুল, ইউনিয়ন আ.লীগের সহসভাপতি হাসান মাষ্টার, ৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক লিটন বেপারী,আবুল কালাম, আ:রশিদ, ৫নং ওয়ার্ড আ.লীগের সম্পাদক জলিল প্রফেসরসহ বেশ কয়েকজন রয়েছে। গজারিয়া শিমুল তলী এলাকায় খালের অর্ধেক দখল করে আরসিসি পিলার নির্মাণ করে দখল করেছে ৭নং ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি রফিক বেপারী ও জলিল প্রফেসর।
এভাবে গজারিয়ার হাই স্কুল রোড, গার্লস স্কুল রোড, উওর মাথা সব খারেই খাল দখলের মহোৎসব শুরু হয়েছে। গজারিয়া বাজারের দক্ষিন মাথায় সিএনভি সড়কের পাশের প্রায় ৩০০ফিট জায়গা দখল করে রাতারাতি ঘর উত্তোলন করে দখল করে নেয় প্রভাবশালী ভুমি দস্যুরা । খালগুলো এভাবে দখল চললেও কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা নেই। খাল দখলের ফলে খালের নাভ্যতা হারাতে বসেছে। খালের গতিপথ বন্ধ হয়ে পানিশূণ্য হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
তা হলে ওই ইউনিয়নের ফসল উৎপাদন মারাতœক হুমকির মুখে পড়বে বলে জানান, স্থানীয়রা। গজারিয়া এলাকা ফসল উৎপাদনের জন্য উপজেলার মধ্যে প্রসিদ্ধ। সেখানে অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ে সবচেয়ে বেশি ফসল উৎপাদন হয়। চার দিকে খাল থাকায় কৃষকরা সহজেই পানি পাচ্ছে। কিন্তু অব্যাহতভাবে খাল দখলের ফলে খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এভাবে চলতে থাকলে একসময় খালের অস্তÍত্বিই খুঁজে পাওয়া যাবে না। খালগুলো দখল হলেও কোনো বিভাগই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারছে না। অভিযানও দেখা মিলছেনা কোনো বিভাগের। নাম মাএ দু-একটি স্থানে দায়সারা নোটিশ দিয়েই কার্যত দায়িত্ব শেষ করার চেষ্টা করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যার ফলে বরাবরই খাল দখলের নেপথ্য নায়করা রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন। দখলকারীদের প্রভাবের কারণে তাদের রুখতে অসহায়ত্ব দেখা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ভোলার পরিবেশ আন্দোলনের সাথে জড়িত মোবাশ্বের উল্ল্যাহ চৌধুরী বলেন, প্রাসনের দায়ীত্বহীনতার কারণে ভূমিতস্যুরা এ সুযোগ পাচ্ছে। খালগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসনের। দখলকারী ভূমিদস্যুরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না। প্রশাসন যথাযথ আইনের প্রতি দায়ীত্বশীল হলে ভূমিদস্যুরা এভাবে খাল দখল করতে পারে না।
লালমোহন ইপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, এ খালগুলো উপজেলা প্রশাসনের আওতাধীন নয়। এগুলো জেলা পরিষদ বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন। দখল মুক্তে তারা সহযোগিতা না চাইলে আমাদের কিছুই করার নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লালমোহনের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান জানান, খাল দখলের বিষয়ে আমরা অভিযান চালাবো।
মন্তব্য চালু নেই