ভোলার দৌলতখান নেয়ামতপুরবাসীর উচ্ছেদ আতংক, প্রতিবাদে বিক্ষোভ-মানববন্ধন
ভোলার দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া ইউনিয়নের নেয়ামতপুর ইউনিয়নের ১০ হাজার বাসিন্দা উচ্ছেদ আতংকে দিন কাটাচ্ছেন। সেখানকার বাসিন্দারা তাদের নিজস্ব জমিতে বসবাস করে আসলেও স্থানীয় প্রশাসনের নোটিশের কারনে ওই জমি হারানোর ভয়ে তারা আন্দোলনে নেমেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে চরবাসী একত্রিত হয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নেয়ামতপুরের ১০হাজার পরিবারকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে নেয়ামতপুর কৃষক সমিতির ব্যানারে হাজারো নারী-পুরুষ এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে।
এ সময় উচ্ছেদের হাত থেকে রক্ষা ও পৈত্রিক সম্পত্তি বুঝে পাওয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা। এরআগে তারা একই দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি ও আবেদন দেন।
মানববন্ধনে চরবাসী জানিয়েছেন, ৭০ সালের দিকে নদী ভাঙ্গনে নেয়ামতপুরের মৌজাগুলো মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে যাবার দুই বছর পর ফের সেগুলো জেগে উঠে। এরপর থেকে হাজার হাজার বাসিন্দা তাদের নিজস্ব জমিতে বসতি তৈরী করে বসবাস করে আসছেন এবং সরকারকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত খাজনা দিয়েও আসছিলেন।
২৪ বছর পর সেই নেয়ামতপুর মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে গেলে সেখানকার বাসিন্দারা ভূমি হারিয়ে অন্যত্র চলে যান। কিন্তু ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে ওই জমিতে নতুন করে চর জেগে উঠলে নতুন বসতির সম্ভাবনা দেখা দেয়। তখন একটি চক্র চরটিকে খাস জমি বানিয়ে সরকারীভাবে বন্দোবস্ত দেয়ার প্রক্রিয়া করে। এ অবস্থায় জমির প্রকৃত মালিকগন হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন। জমির মালিকগনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০০৬ সালের ১৪ মে মহামন্য বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসাইন ও মামুনুর রহমান সমন্বয়ে গঠিন বেঞ্চ প্রকৃত জমির মালিকগনকেই শুধুমাত্র ওই চরে অবস্থান করার আদেশ দেয়। আদেশ পাওয়ার পর থেকে মৌজা অনুযায়ী তাদের নিজ নিজ জমিতে বসতি শুরু করেন।
নেয়ামতপুর কৃষক সমিতির সভাপতি ও জমির মালিক ফেরদৌস আহাম্মদ, সাধারন সম্পাদক বশির আহমদ, ইউসুফ জিলাদার, মো: ইউনুস ও মহিউদ্দিন জানান, হাইকোর্টের আদেশে আমরা আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে ভোগ দখলে রয়েছি, কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে একটি চক্র আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে।
তারা ষড়যন্ত্র করে চরবাসীকে উঠিয়ে দেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম করে মাইকিং করে এক সপ্তাহের মধ্যে চর ছেড়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। এতে চরের মালিকরা চরম অনিরাপদ ও আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তাই পৈত্রিক সম্পর্ত্তি হারানোর ভয়ে তারা আন্দোলনে নেমেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন মাইকিং করা হয়নি। তবে ২০০৭ সালের দিকে নেয়ামতপুর চরটিকে খাস ঘোষনার একটি নোটিশ রয়েছে, সেই লক্ষ্যে প্রকৃত ভূমিহীনদের জমি বুঝিয়ে দেয়া হবে।
ভোলার জেলা প্রশাসক মো: সেলিম রেজা বলেন, চরের জমি বন্দোবস্ত দেয়ার বিষয়ে কোন আদেশ আমাদের কাছে আসেনি, তাই উপজেলা প্রশাসনকেও কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি। তবে চরের মালিকগন আমার কাছে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
মন্তব্য চালু নেই