ভালোবাসার প্রমাণ দিতে স্ত্রীকে বুক চিরে দেখালেন স্বামী

স্ত্রীর অধিকার নিয়ে ভালোবাসার প্রমাণ দিতে নিজের শরীর ক্ষত-বিক্ষত করলেন স্বামী মিন্টু। কতটা স্বামী মিন্টু কতটা ভালোবাসে তারই প্রমাণ দিতে গিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সামনে ব্লেড দিয়ে তিনি নিজের বুক চিরেছেন।

রোববার বিকেলে মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় শিংগা গ্রামে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। পরে আহতাবস্থায় মিন্টুকে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।

বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত মানুষ পাগল স্বামীকে দেখতে হাসপাতালে ভিড় জমায়।

জানা যায়, ঢাকায় গার্মেন্টে চাকরি করতে গিয়ে নারী কর্মী রাবেয়ার (২৭) সঙ্গে পরিচয় হয় অটোচালক মিন্টু সরদারের (৩৫)।

পরিচয় থেকে প্রেম। তারপর বিয়ে। কিছুদিন পর ওই দম্পতির ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।

এমন অবস্থায় উভয়ের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যান এবং স্বামীকে পাঠিয়ে দেন ডিভোর্স লেটার। কিন্তু স্বামী মিন্টু স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে নারাজ। এমতাবস্থায় শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে মিন্টু নিজের শরীর ব্লেড দিয়ে চিরে ফেলেন।

মিন্টু ওরফে সাগর মুন্সিগঞ্জ জেলার দক্ষিণ ইসলামপুর গ্রামের নাদের আলী সরদারের ছেলে ও তার স্ত্রী রাবেয়া উপজেলার বড় শিংগা গ্রামের দিনমজুর আবদুল হালিম মৃধার মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাবেয়া বেগমের সঙ্গে মিন্টু ওরফে সাগরের তিন বছর আগে চাকরির সুবাদে পরিচয়। এরপর তাদের বিয়ে হয়।

সম্প্রতি পারিবারিক কলহের জের ধরে রাবেয়া বেগম বাড়িতে বাবার বাড়ি ফিরে আসে। গত ২৪ আগস্ট রাবেয়া বেগম নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে স্বামী মিন্টুকে ডিভোর্স লেটার পাঠায়। ডিভোর্সের খবর পেয়ে স্ত্রী সন্তানকে ফিরিয়ে নিতে ঢাকা থেকে মঠবাড়িয়ায় চলে আসেন মিন্টু।

স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে ও ভালোবাসার প্রমাণ দিতে মিন্টু সবার সামনেই ব্লেড দিয়ে নিজের সারাশরীর ক্ষত-বিক্ষত করেন।

স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, তার স্বামী একজন নেশাখোর। বিয়ের পর স্বামী মিন্টু তাকে দিয়ে অবৈধ ব্যবসা করানোর চেষ্টা চালিয়েছেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে একাধিকবার নির্যাতন করা হয়। পরে বাধ্য হয়ে স্বামীকে ডিভোর্স লেটার পাঠান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিন্টু বলেন, আমি স্ত্রী ও সন্তানকে অনেক ভালোবাসি। ডিভোর্সের খবর শুনে আমি পাগলের মতো আমার স্ত্রীর কাছে ছুটে আসি। আমি ডিভোর্স মানি না। আমি আমার স্ত্রী সন্তানকে ফিরিয়ে নিতে চাই। কতটুকু ভালবাসি এর প্রমাণ দিতেই নিজেকে ক্ষত-বিক্ষত করেছি।

মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আহত মিন্টুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই