ভারতে শিশুপর্নো এখন ৩৪ হাজার কোটি ডলারের ইন্ডাস্ট্রি

এমনিতেই ধর্ষণ সমস্যা নিয়ে মহাফ্যাসাদে ভারত সরকার। এর মধ্যে আরেক রোগে পেয়েছে- শিশুদের ব্যবহার করে যৌন ব্যবসা। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ বালিকাকে যৌন ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হচ্ছে। আর এটি এখন ৩৪ কোটি ডলারের ইন্ডাস্ট্রিতে দাঁড়িয়েছে।

চমকে ওঠার মতো এই তথ্য পাওয়া গেছে সম্প্রতি নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত কৈলাস সত্যার্থীর নেতৃত্বে পরিচালিত সমীক্ষায়। ওই রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে এখন যৌন ব্যবসার রমরমা। এ ব্যবসার বাৎসরিক আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলারে।

নোবেলজয়ী কৈলাস সত্যার্থী প্রতিষ্ঠিত শিশু অধিকার সংস্থা গ্লোবাল মার্চ এগেইনস্ট চাইল্ড লেবার এর উদ্যোগে সম্প্রতি ভারতে যৌন ব্যবসায় নিয়োগের জন্য শিশু পাচারের ওপর সমীক্ষাটি করা হয়।

সমীক্ষার ফলাফলকে ‘গভীর উদ্বেগজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন কৈলাস। তিনি জানান, যৌন ব্যবসায় শিশুপাচারে যে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন হয়, পাচারকারী ছাড়াও তার ভাগ পায় যৌনপল্লীর মালিক, মহাজন, আইনরক্ষক, আইনজীবী এবং বিচার ব্যবস্থায় জড়িত আরও অনেকে।

অন্যদিকে নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের এক রিপোর্ট জানিয়েছে, এই হিসাব শুধুমাত্র সরাসরি দেহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বালিকাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন ড্যান্স বার ও ম্যাসাজ পার্লারে কর্মরত বহু মেয়ে রয়েছে যারা পাচার সূত্রে এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছে।

এই অপরাধের সঙ্গে আইন ও বিচার বিভাগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগাযোগকে খুবেই উদ্বেগজনক মনে করা হচ্ছে। গ্লোবাল মার্চ এগেনস্ট চাইল্ড লেবার এর সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন ব্যবসার দৌলতে আইন প্রযোগকারী কর্মকর্তারা বছরে পান করেন ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। এভাবেই আইনজীবী ও বিচার ব্যবস্থায় জড়িতরা পান ৫ হাজার ১৫০ কোটি ডলার।

ওই সমীক্ষা অনুসারে, প্রতি বছর ৩৬ লাখ শিশু শ্রমিককে অন্যান্য কাজে নিয়োগ করা হয়। তাদের নিয়োগ করার ব্যাপারে সাহায্য করে বিভিন্ন নিয়োগকারী সংস্থা বা প্লেসমেন্ট এজেন্সি। জানা গেছে, শুধু দিল্লিতেই এরকম ৩ হাজার এজেন্সি রয়েছে। বাড়ি, কারখানা বা দোকানে কাজ করার জন্য প্রাথমিকভাবে যেসব শিশুকে আনা হচ্ছে, পরে তাদেরই কৌশলে আনা হচ্ছে যৌন ব্যবসায়।

কৈলাস সত্যার্থীর দাবি, বেশিরভাগ শিশুই পাচার হচ্ছে আসাম ও বিহার থেকে। ৪০ শতাংশ শিশুকে যৌন ব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হয়।

তিনি মনে করেন, পাচার হওয়া শিশুদের উদ্ধারের পর সরকারি ক্ষতিপূরণ দেয়া আবশ্যিক। ইতিমধ্যে কিছু রাজ্য ২৫ হাজার রুপি থেকে ২ লাখ রুপি পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করলেও তা যথেষ্ট নয়।

তিনি জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশু পাচারের বিস্তারিত তথ্য জানাতে শিগগিরই নতুন ওয়েবসাইট চালু করবে তার সংস্থা।



মন্তব্য চালু নেই