ভারতের ডাবল হ্যাটট্রিকের জয়ের পেছনে ১০ কারণ
ভারতের ডাবল হ্যাটট্রিকের জয়ের পিছনে ১০টি কারণ খুঁজে পেয়েছেন একজন ভারতীয় সাংবাদিক।
১. ধাওয়ানের রানে ফেরা
খুব দরকার ছিল৷ শিখর রান পেয়ে যাওয়ায় ওপেনিং নিয়ে চিন্তা অনেকটা কমল৷ বিশ্বকাপে এটা অন্যতম বড় চিন্তা ছিল৷ শিখর যদি রান না পেত, ওপেনিং নিয়ে আবার ভাবতে বসতে হতো৷ সেটা মিটল বলেই মনে হচ্ছে৷
প্রস্তুতি ম্যাচে রান পাচ্ছিল না৷ একটু চিন্তা ছিল৷ এ দিনের সেঞ্চুরি বুঝিয়ে দিল, বিরাট আছে বিরাটেই৷ ওর এই ইনিংসটা আমার কাছে অসাধারণ৷ বেছে বেছে বল খেলেছে৷ ছাড়ার বল ছেড়েছে৷ ধৈর্য্য ধরেছে৷ অহেতুক বিগ হিট মারতে যায়নি৷ তিন নম্বরে নেমে ঠিক যেরকম খেলা উচিত৷ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এ দিন তিন নম্বরে ঠিক এই ইনিংসটাই দরকার ছিল৷ বিরাট এর আগে-পরে প্রচুর ভালো ইনিংস খেলেছে, খেলবে৷ কিন্তু পরিস্থিতির বিচারে এটা অন্যতম সেরা৷
৩. অসাধারণ রায়না
৫৬ বলে ৭৪ রান৷ ওই সময় এর চেয়ে ভালো ইনিংস আর কী হতে পারে? বিরাটের সঙ্গে ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশন দারুণ জমল৷ আফ্রিদি-ইয়াসির আর হারিস, পাকিস্তানের তিন স্পিনারকে সামলাতে রায়নার ওরকম ব্যাটিংই দরকার ছিল৷
৪. ধোনির নেতৃত্ব
ধোনির এই ম্যাচে ক্যাপ্টেন্সি দারুণ৷ হারিস সোহেলকে আউট করার জন্য অশ্বিনকে নিয়ে এলো৷ স্লিপে রায়নাকে দাঁড় করিয়ে দিল৷ ফলও পেল৷ রায়নাকে ব্যাটিং অর্ডারে এগিয়ে দিল৷ এগুলোই তো একজন ভালো নেতার পর্যবেক্ষণ৷
৫. ডিআরএস নেওয়া
কামরান আকমলের ব্যাটে বল লেগেছিল, এটা ধোনিই একমাত্র বুঝতে পেরেছিল৷ সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেনি৷ পজিটিভ সিদ্ধান্ত৷ ম্যাচটা তখনই পাকিস্তানের হাত থেকে বেরিয়ে যায়৷
৬. ভারতের বোলিং
প্রচুর প্রশ্ন ছিল৷ প্রচুর সংশয় ছিল৷ প্রথম ম্যাচের পর কিছুটা স্বস্তি তো বটেই৷ আমার তো মনে হয়, ইশান্ত শর্মার বিদায় শাপে বর হয়েছে৷ মোহিত শর্মার বড় গুণ, ওকে একটা সেট ফিল্ড দিয়ে দেওয়া যায়৷ মোটামুটি সেই অনুযায়ী বল করে৷ লেগ কাট, ব্যাক অব দ্য হ্যান্ড, অফ স্পিন স্লোয়ার, তিনটাই আছে ওর হাতে৷ খারাপ হবে না টুর্নামেন্টে৷
৭. বিরাটের ক্যাচ মিস
এটাকে ম্যাচের টানিং পয়েন্ট বলা যায়৷ বিরাট তখন ৭৬ রানে ব্যাট করছে৷ আকমল ওর ক্যাচ ফেলে দিল৷ হারিস সোহেলের বলে বিরাট ওই সময় আউট হয়ে গেলে ম্যাচের রং বদলে যেতে পারত৷ বিরাটের মতো ব্যাটসম্যান সুযোগ দল, সেটা বিপক্ষ টিম কাজে লাগাতে পারল না, এরপর আর জেতার চিন্তা থাকে কী করে!
৮. ইউনিসকে খেলিয়ে যাওয়া
কমেন্ট্রি করে বেরিয়ে শোয়েব আখতারের সঙ্গে গল্প হচ্ছিল৷ শোয়েব দেখলাম, ইউনিসকে নিয়ে দারুণ খাপ্পা৷ বলছিল, দশ বছর আগেও যে ওয়ান ডে-র জন্য পারফেক্ট ছিল না, আজও তাকে টিমে নেওয়া হচ্ছে! প্রায় ৪০ বছর বয়স৷ ইউনিস টিমে সুযোগ পায় কী করে? আমারও এক মত৷ ইউনিসকে টিমে নিতে ওপেনিংয়ের জায়গাটা নষ্ট করা হল৷ নাসির জামশেদের মতো স্পেশ্যালিস্ট ওপেনার বসে আছে৷ তারপরেও ইউনিস!
৯. দায়িত্বজ্ঞানহীন শেহজাদ
পাক ওপেনার আহমেদ শেহজাদকে নিয়েও দেখলাম শোয়েব খুব রেগে আছে৷ আমায় বলছিল, সেট হয়ে যাওয়ার পর কেউ ও ভাবে উইকেট দেয়! শেহজাদের আরও দশ ওভার খেলে আসা উচিত ছিল৷ আমিও শোয়েবের সঙ্গে একমত৷ শেহজাদ যদি আরও দশ ওভার থাকত, পরের দিকে আফ্রিদি-মিসবাদের কাজ সহজ হয়ে যেত৷
১০. এবং দুরন্ত সামি…
শেষে ইচ্ছে করেই ওকে রাখলাম৷ ভাবতে ভালো লাগছে, ছেলেটা আমাদের বাংলার হয়ে খেলে৷ অনেক দিন পর ওকে পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করতে দেখলাম৷ ইয়র্কার-স্লোয়ার দিয়েছে৷ ওই কিন্তু আমাদের স্ট্রাইক বোলার৷ ডেথ ওভারে ভারত ভালো বল করতে হলে সামিকে সেরাটা দিতে হবে৷ প্রথম দিনের পর ওর কাছ থেকে সেই আশা করছি৷- ওয়েবসাইট।
মন্তব্য চালু নেই