ভারতের চিকিৎসায় সন্তুষ্ট নয় পরিবার, এবার যাবেন আবুধাবি
একদা বিশ্বের স্থূলতম মহিলা ছিলেন ইমান আহমেদ। ভারতে অস্ত্রোপচার করে তার প্রায় অর্ধেক ওজন কমে গেছে। তবে তার আশানুরূপ উন্নতি হয়নি বলে দাবি করেছেন ইমানের বোন। আর তাই এবার তাকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য আবুধাবির বারজিল হাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইমানের পরিবার।
ইমান আহমেদের বাড়ি মিশরে। ওজন ছিল ৫০০ কিলোগ্রামের চেয়ে খানিকটা বেশি। চিকিৎসক মুফজ্জল লাকড়াওয়ালা ইমানের অস্ত্রোপচারের কথা বিশদে জানিয়ে একটি অনলাইন প্রচার চালিয়েছিলেন। মুম্বাইয়ের সইফি হাসপাতালে শুরু হয় ইমানের অস্ত্রোপচার। দু’ মাসে প্রায় অর্ধেক ওজন কমে ইমানের।
এরপরই মারাত্মক অভিযোগ আনলেন ইমানের বোন শাইমা সেলিম। জানালেন, ভারতীয় চিকিৎসকরা ইমানকে সঠিক পথে চিকিৎসা করছেন না। ইমানের সুস্থ হয়ে ওঠার ব্যাপারেও মিথ্যা বলছেন তাঁরা। এরপরই তিনি সরাসরি অভিযোগের আঙুল তোলেন চিকিৎসক মুফজ্জল লাকড়াওয়ালার দিকে।
মার্চে স্লিভ গ্যাসস্ট্রোস্টমি অস্ত্রোপচারের সময়ে ইমানের পাকস্থলীর খানিকটা অংশ কেটে বাদ দেওয়া হয় (পাকস্থলীর আকার পূর্বের ১৫ শতাংশ)। বাদ দেওয়া হয় অতিরিক্ত ফ্যাট। এর ফলে কমে যায় খাদ্যগ্রহণের পরিমাপ। পরবর্তীতেও বেশ কয়েকটি বেরিয়াট্রিক সার্জারি জরুরি বলেও জানান চিকিৎসকরা। কিন্তু শাইমার দাবি, ইমান একটুও সুস্থ হননি। গত দেড় মাস ধরেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন তিনি। আরও একটি মারাত্মক অভিযোগ করেন শাইমা। তাঁর বক্তব্য, ভুল ওষুধ দিয়ে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বন্ধ করে রাখা হয়েছে ইমানের।
অভিযোগের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে শাইমা বলেন, ইমানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তাঁর চোখ-মুখ নীল হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয়বার স্ট্রোক হয়েছে তাঁর। এমনকী, মুম্বাইয়ে আসার পর বেশ কয়েকবার মৃগীর আক্রমণে খিঁচুনিও দেখা দিয়েছিল তাঁর। থ্রম্বোসিসের আক্রমণের কথাও বলেন তিনি। ফিডিং টিউব ব্যবহার করায় ইমান নিশ্বাস নিতে পারছেন না।
যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লাকড়াওয়ালা। তিনি জানান, ইমানের স্নায়বিক পরিস্থিতি দেখতে সিটি স্ক্যানও করা হয়েছে তাঁর। শামিমের মত, ইমানকে মিশরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন না শাইমা। তাই তিনি মিথ্যা অভিযোগ আনছেন। কারণ চিকিৎসা শুরুর ১৫ দিন পরেই হাসপাতাল থেকেই বলা হয়েছিল ইমানকে মিশরে নিয়ে যেতে পারেন শাইমা। তবে আর্থিক কারণেই তা চাননা। ইমানের অস্ত্রোপচারের পরই দ্রুত সুস্থ হতে থাকেন তিনি। ওজন কমতে থাকে। তাঁর দাবি, বর্তমানে ইমানের ওজন ১৭১ কিলোগ্রাম। তাঁর কিডনি, হার্ট (হৃদযন্ত্র)ও ফুসফুসের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। সঠিক ফিজিওথেরাপির সাহায্যে নিলে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে ইমান নিজে চলাফেরা করতেও সক্ষম হবেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনি একটি কার্গো প্লেনে এসেছেন। এখন ওজন কমানোর পর তিনি হুইলচেয়ারে বসেই যাতায়াত করতে পারবেন। তার আরও সুস্থ হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ফিজিওথেরাপি ও নিবিড় পরিচর্যা প্রয়োজন হবে।-বিবিসি।
মন্তব্য চালু নেই