ভরসা দিচ্ছে না সরকার, দ্বিধায় খালেদা!
বছরের শুরু থেকে টানা অবরোধের পাশাপাশি ধারাবাহিক বিরতিতে হরতাল ডাকছে বিএনপি জোট। তবে গত শনিবার বিবৃতিতে হরতাল উল্লেখ ছিল না। এ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেছিলেন, তাদের কৌশলগত কারণে এখন থেকে নিয়মিত হরতাল থাকছে না।
গত কয়েকদিন হরতাল না থাকাতে অনেকের ধারণা হয়েছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোট হরতাল বাদ দিয়ে কর্মকৌশলে পরিবর্তন আনছে। কিন্তু রোববার আবারো হরতালের ডাক দিয়ে অনেকটা ধন্দে ফেলে দিয়েছেন তারা। তবে এবার ঢাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগরী এই কর্মসূচির আওতামুক্ত রয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে বিএনপি জোট কি তাহলে হরতাল কর্মসূচি নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে? নাকি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়েই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।
জানতে চাইলে আহমেদ আযম খান বলেন, ‘এ বিষয়টি পরিষ্কার করতে মুখপাত্রের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু কোনো মুখপাত্র সাবলীল এবং সহজভাবে কাজ করতে পারছে না। যাকেই মুখপাত্র করা হয় তাকেই গুম, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কার্যত বিএনপি মুখপাত্র সঙ্কটে রয়েছে। এ বিষয়ে মুখপাত্রই সঠিক উত্তর দিতে পারতেন।’
তিনি বলেন, ‘আজ (রোববার) মনোনয়নপত্র জমা দেয়া শেষ হলো, বাছাই এখনও শুরু হয়নি, প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে। নির্বাচন চূড়ান্ত পর্যায় গেলে তখন যদি এ ধরনের কর্মসূচি আসে তখন আপনারা এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন যে বিএনপি কর্মসূচি গ্রহণের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।’
বিশ্লেষকদের মতে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিএনপি ও জোটের মধ্যে আলোচনার সুযোগ না থাকায় এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
যদিও বিএনপি জোটে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কার্যত দুই জন ব্যক্তি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এর বাইরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কারো অবদান রাখার সুযোগ নেই বলেই মনে করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, হরতালে বিরতি দিয়ে মূলত বিএনপি মূলত সরকারের মনোভাব বুঝতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন ধারণা করছে, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করবে না। তাই সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই আবারো হরতালের ডাক দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ২০দলীয় জোটের শীর্ষ এক নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আপনার সঙ্গে আমার এ বিষয়ে কথা হয়েছে তাও লিখতে পারবেন না।’
সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘আগে যখন পরিবেশ ভালো ছিল তখন আমরা সিনিয়র এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির নেতারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই মুহূর্তে স্ট্যান্ডিং কমিটি বসতে পারতেছে না। চেয়ারপারসনের কাছে ক্ষমতা দেয়া আছে। যেহেতু আমরা মিলিত হতে পারছি না, চেয়ারপারসনের যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে তিনি তা প্রয়োগ করছেন।’
মন্তব্য চালু নেই