বয়সকে হার মানিয়ে মহাকাশে উড়াল দিলেন যে নারী
কুড়িতেই বুড়ি- এই প্রবাদ শুনতে শুনতে বড় হোন নি এমন একজন নারীও আমাদের দেশে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। আমাদের পরিবেশ, সমাজ নারীর জীবনকে গন্ডিতে আবদ্ধ করতে সদা উন্মুখ। এই গন্ডি শুধু বাংলাদেশেই আছে এমন নয়। আছে বিশ্বের প্রতিটি দেশেই। সমান অধিকারের কথা মুখে যতই বলা হোক না কেন অধিকার আদায় করেই সমান অবস্থানে যেতে হয় প্রতিটি নারীকে। তেমনই একজন নারীর কথা জানব আজ যিনি শুধু এই চলমান বৈষম্যকে উৎরে যান নি, একইসাথে বয়স নিয়ে প্রচলিত সকল ভুল ধারণাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করেছেন ৫৬ বছর বয়সে।
পেগি হুইটসন। নাসার এই আকাশচারী আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে পৌছে নিজেকে সবচেয়ে প্রবীণ নারী আকাশচারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এই মিশনে তিনি আবারও যুকরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশী সময় কক্ষপথে অবস্থানকারী মহাকাশচারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে এটি হুইটসনের মহাকাশ স্টেশনে ৩য় মিশন ছিল। তিনি শীঘ্রই ২য় বারের মত এর কমান্ডার হতে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে জীবনের ১টি বছর তিনি পার করেছেন মহাকাশেই।
যখন হুইটসন ২০১৭ সালের বসন্তে পৃথিবীতে অবতরণ করবেন তখন জেফ উইলিয়ামের চেয়েও কক্ষপথে তার অবস্থানকাল বেশী হবে। উইলিয়াম ৫৩৪ দিন বিশ্বের বাইরে অবস্থান করে নতুন ইউ. এস. প্রতীক স্থাপন করেছেন। হুইটসনের সয়ূজ এমএস-০৩ মহাকাশযানটি যদি আগামী বছরের মে মাসে পৃথিবীতে ফিরে আসে তাহলে সেটি ছাড়িয়ে যাবে উইলিয়ামের রেকর্ডকে।
নাসার পক্ষ থেকে সারাংশটি এমন-
‘আইওয়া স্থানীয় এই নারী ২০০২ এর এক্সপেডিশন ৫ এর জন্য এবং ২০০৮ এর এক্সপেডিশন ১৬ এর জন্য মহাকাশে ২টি ৬ মাসের ট্যুর সমাপ্ত করেছেন। ২টি মিশন মিলিয়ে তিনি ৩৭৭ দিন মহাকাশে ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নারী হিসেবে এটি সবচেয়ে বেশী সময়। হুইটসন ৬টি স্পেসওয়াকও পারফর্ম করেছেন যার মোট সময় ৩৯ ঘন্টা ৪৬ মিনিট’।
হুইটসন বায়োকেমিস্ট্রির ডক্টরেট ডিগ্রীধারী নারী। বর্তমান আইএসএস মিশন চলাকালে তার বয়স ৫৭ পূর্ণ হবে।
হুইটসন প্রমান করেছেন, বয়স কোন বিষয় নয়। আপনার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ আসতে পারে যে কোন সময়। আপনাকে শুধু তৈরি থাকতে হবে স্বপ্নের হাত ধরে এগিয়ে যাওয়ার জন্য, অচেনার চেনার জন্য, জানার জন্য, গ্রহণ করার জন্য। হুইটসনের মত নারীরাই আমাদের প্রেরণা।
মন্তব্য চালু নেই